‘বদলা চাই’, দাবি শহীদ রাজেশের পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের জন্য প্রাণ দিলেন বীরভূমের মহঃবাজার ব্লকের বেলগড়িয়া গ্ৰামের রাজেশ ওরাং। মঙ্গলবার সন্ধায় রাজেশ ওরাংয়ের বাড়িতে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ফোন আসে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় রাজেশ ওরাং চিনা সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে আহত হয়ে আর্মি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

কিছুক্ষণ পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয় রাজেশ ওরাং দেশের জন্য লড়তে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজেশ ওরাংয়ের বাবা ও মা। মা মাঝে মাঝেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। ঘটনায় আকস্মিকতায় শোক নেমে এসেছে এলাকায়। তবু রাজেশ ওরাংয়ের বাবা সুভাষ ওরাং ও মা মমতা ওরাং তাদের সন্তানের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটায় বদলা নেবার দাবি করেছেন ভারতের সরকারের কাছে। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছেন, দেশের জন্য তাদের সন্তান প্রাণ দেওয়ায় তাঁরা গর্বিত।

কিছুদিনের মধ্যেই রাজেশের বাড়ি ফেরার কথা ছিল বলে পরিবারের লোকজন জানান। লকডাউনের কারণে আটকে পড়েছিল সে। শেষবার বাড়ি এসেছিলেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। বাড়িতে সেই ছিল একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

পরিবারের লোকজন জানান রাজেশ ওরাং প্রথম থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছিল। সে ছিল ভালো স্পোর্টস ম্যান। নিয়মিত শরীরচর্চা করত। সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে পড়ার সময় সুযোগ আসে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। সিউড়িতেই পরীক্ষায় সফল হয়ে ২০১৫ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। প্রথম পোস্টিং ছিল তাঁর জম্মুতে। তারপর গত দুই বছর পোস্টিং ছিল লাদাখে। সেখানেই চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে গত মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়। স্বপ্ন ছিল বাড়ি এসে ছোট বোনের বিয়ে দেবেন, সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন সীমান্তে হত বাঙালি শহিদদের পরিবারের সদস্যদের একজনের চাকুরি ও ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।

দুই সপ্তাহ আগে খুড়ততো ভাইয়ের সঙ্গে রাজেশ ওরাঙের শেষ কথা হয়। বলেছিলেন দ্রুত বাড়ি ফিরবেন। ফিরছেন কিন্তু শেষবারের মতো কফিন বন্দি হয়ে।