বাড়িতে বসেই মাত্র ১ টাকায় ব্লাড টেস্ট, খড়গপুর IIT-র অভাবনীয় আবিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদন : খড়গপুর আইআইটি গবেষকরা আবিষ্কার করলো এক অভাবনীয় যন্ত্র। যার মাধ্যমে আপনি অনায়াসেই জানতে পারবেন আপনার ব্লাড সুগার কত, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়া কমা করেছে কিনা। যন্ত্র বললে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই, এই নতুন পদ্ধতির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে একটি স্মার্ট ফোন এবং বেশ কিছু সস্তার উপাদান। আবিষ্কারের পর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সেই যন্ত্র সফলভাবে কাজ করতে সক্ষম।

আইআইটি খড়গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী গত ৭ বছর আগে এই যন্ত্র তৈরির জন্য গবেষণা শুরু করেন। গ্রাম্য পরিবেশে যেখানে স্বাস্থ্যপরিসেবা নূন্যতম সেই সকল জায়গায় রক্ত পরীক্ষা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাঁর এই গবেষণা। তাঁর এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল রয়েল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রিতে।

সাত বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি স্বল্প খরচে রক্ত পরীক্ষা করার যন্ত্র আল্ট্রা লো কস্ট ব্লাড টেস্ট ডিভাইস। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এই যন্ত্রটি তৈরি করার জন্য লাগে মাত্র একটি স্মার্টফোন, রাখার জন্য একটি হোল্ডার, যার মধ্যে রয়েছে একটি ছোট্ট এলইডি লাইট। ওই এলইডি লাইটের আলো একটি ফিল্টার পেপারের মধ্যে দিয়ে সরাসরি ক্যামেরায় পড়বে। ওই ফিল্টার পেপারেই থাকবে রক্তের নমুনা, আর যার ছবি দেখে বোঝা যাবে রক্তে শর্করা ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ।

ওই ফিল্টার পেপারে এক ফোটা রক্ত ফেললে রক্তকণিকা এবং রক্ত রস আলাদা হয়ে যাবে। রক্ত রস ছোট্ট টিউবের মধ্য দিয়ে কাগজের অপরপ্রান্তে রাখা রাসায়নিকে গিয়ে পড়বে। তারপর রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত রস লালচে বাদামী রঙ নেবে। এই বাদামী রঙ যত গাঢ় হবে বোঝা যাবে রক্তে শর্করার পরিমাণ ততই বেশি, বলে জানিয়েছেন আইআইটি খড়গপুর ওই গবেষক সুমন চক্রবর্তী।

তিনি আরো জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ নির্ণয় করা যায় অতি স্বল্প মূল্যে। খরচ বলতে একটি স্মার্টফোন এবং একটি হোল্ডার, এবং ফিল্টার পেপার ও রাসায়নিকের জন্য অল্প কিছু খরচ। পরীক্ষাগারে অন্যান্য খরচ বাদ দিলে এই ফিল্টার পেপার এবং রাসায়নিকের খরচ ধরে প্রতিবার রক্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে মাত্র ১ টাকা।