ঘরোয়া পদ্ধতিতে করোনার বিরুদ্ধে শরীরে ইমিউনিটি বাড়ানো, পাশাপাশি রোজগারের সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বব্যাপি করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়তে আমাদের যেমন সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন স্ট্রং ইমিউনিটি বা শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর তার জন্য চাই সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু ভারতবর্ষের মতো দেশে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্পগুলি খুঁজে বের করা পুষ্টি বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এক্ষেত্রেই আলোর দিশা দেখাচ্ছে মাইক্রোগ্রীন।

বহুযুগ ধরেই বিভিন্ন রকমের অঙ্কুরিত বীজ, পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষের কাছে একটি সহজলভ্য পুষ্টিকর খাবার হিসেবে গৃহিত হয়ে আসছে। কিন্তু অঙ্কুরোদ্গমের সময় কম সূর্যালোক ও উচ্চ আর্দ্রতার কারণে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু বা প্যাথোজেন্স তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই সমস্যাকে কাটিয়ে উঠে খুব সহজেই, সামান্য খরচে নিজের বাড়িতেই আমরা তৈরি করতে পারি এর চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার মাইক্রোগ্রীন।

আসলে মাইক্রোগ্রীন হলো বীজের অঙ্কুরোদ্গম ও পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদ হয়ে ওঠার মাঝের একটি ধাপ।অঙ্কুরিত বীজের ভ্রূণমুকুলটি যখন প্রথম একজোড়া পাতা তৈরি করে, তখন তাকে মাইক্রোগ্রীন বলা হয়। ডাল শস্য, বাদাম, ছোলা, ব্রকোলি, গাজর ইত্যাদি নানা ফসলের মাইক্রোগ্রীন তৈরি করা যেতে পারে। এর জন্য জমির প্রয়োজন পড়ে না। বরং জল বেরিয়ে যেতে পারে এমন ছিদ্র যুক্ত পাত্রে মাটি ভরে বা মাটির বিকল্প হিসেবে কোকোপিট এমনকি টিস্যু পেপার ব্যবহার করে বাড়ির ভিতরেই মাইক্রোগ্রীন উৎপাদন সম্ভব। এমনকি কৃত্রিম আলোতেও এই চাষ করা যেতে পারে।

মাইক্রোগ্রীনে আছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন C, ভিটামিন E, ক্যারটিনয়েড,বিটা ক্যারোটিন, খনিজ লবণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে মাইক্রোগ্রীনের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশ বাড়ায়, বিশেষত শহরাঞ্চলের রেস্টুরেন্টগুলিতে এর বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া খাবারের গার্নিসিং বা সৌন্দর্যায়নে ও খাবারে নিত্যনতুন ফ্লেভার ও টেক্সচার আনতেও এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে।তাই ব্যবসায়িক ভাবে মাইক্রোগ্রীনের উৎপাদন একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা হিসেবে উঠে আসছে।

সুষ্ঠু যোগাযোগ ও বিপণনকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই বিদেশে ও আমাদের দেশেও বহু উদ্যোগী চাষী মোটা অঙ্কের মুনাফা ঘরে তুলছেন। বিশেষ করে পুঁজি ও জায়গার প্রয়োজন বিশেষ না থাকায়, মাইক্রোগ্রীন উৎপাদন দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।