ভারতের একমাত্র ট্রেন, ভাড়া লাগে না যাত্রীদের, ৭৩ বছর ধরে চলছে বিনামূল্যে

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের মতো প্রায় দেড়শ কোটির দেশে প্রতিদিন কয়েক কোটি মানুষ রেল পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। চিকিৎসা, ভ্রমণ অথবা অন্য কোন জরুরী কাজে এই রেল পরিষেবার ওপর নির্ভর করেই এই কোটি কোটি মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন। তবে এই রেল পরিষেবার জন্য প্রতিটি যাত্রীকে নির্দিষ্ট ভাড়া গুনতে হয়।

শুধু নির্দিষ্ট ভাড়া গুনতে হয় এমনটা নয়, এর পাশাপাশি কোন যাত্রী যদি টিকিট না কেটে ট্রেনে ওঠেন তাহলে তাকে জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়। তবে এসবের মাঝেই ভারতে একটি আজব ট্রেন রয়েছে যাতে যাত্রীদের কোন ভাড়া দিতে হয় না। ৭৩ বছর ধরে বিনামূল্যে এই ট্রেনটি পরিষেবা দিয়ে আসছে।

যাত্রীদের ভাড়া দিতে হয় না অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যে ট্রেনটি একমাত্র ট্রেন হিসাবে ভারতের রেল ট্র্যাকে চলে সেই ট্রেনটি হিমাচল প্রদেশ এবং পাঞ্জাব সীমান্তে পরিষেবা দিয়ে আসছে। হিমাচল প্রদেশ এবং পাঞ্জাব সীমান্তে ভাকরা ও নাগালের মধ্যে এই ট্রেনটি চলাচল করে থাকে। কেউ ভাকরা বাঁধ দেখতে গেলে এই বিনামূল্যের ট্রেনে চাপার সুযোগ পাবেন।

৭৩ বছর ধরে বিনামূল্যে এই বিশেষ ট্রেনে যাতায়াত অর্থাৎ পরিষেবার সুযোগ পাচ্ছেন অন্ততপক্ষে ২৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। এই ট্রেনটি ভাকরা বাঁধ সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য চালানো হয়ে থাকে। বাঁধ তৈরি করার সময় কি কি অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়েছিল সেই সম্পর্কেও জানানো হয় এই ট্রেনে। ট্রেনটি পরিচালনা করে ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড। এই ট্রেনটি যে রেলপথ দিয়ে চলাচল করে সেটি পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছিল।

এই বিশেষ ট্রেনটি প্রথম চলাচল শুরু করে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে। তারপর থেকেই এলাকার সাধারণ মানুষেরা এই ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এই ট্রেনে প্রতিদিন ২৫টি গ্রামের অন্ততপক্ষে ৩০০ জন যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। এই ট্রেনে যারা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পান তাঁরা হলেন ছাত্রছাত্রীরা। ট্রেনটি দিনে দুবার যাতায়াত করে। ট্রেনটি সকাল ৭.০৫ মিনিটে নাগাল থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ভাকরায় গিয়ে ৮.২০-তে ফিরে আসে। এরপর আবার বিতেল ৩.০৫-এ নাগাল থেকে ছেড়ে বিকেল ৪.২০-তে ভাকরা হয়ে ফেল নাগালে ফিরে আসে। প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে ৫০ লিটার ডিজেল লাগে। এই ট্রেনে কোন টিকিট পরীক্ষক নেয়।