সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে পালিত হলো জগন্নাথ দেবের নেত্রোৎসব

লাল্টু : জগন্নাথ দেবের ভক্তদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল স্নান যাত্রা। জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব হয়। এই দিনটিকে জগন্নাথের জন্মতিথি মনে করা হয়। মূল মন্দির থেকে বিগ্রহ বের করে স্নান বেদীতে আনা হয়। সেখানেই তাদের প্রথাগতভাবে স্নান করানো হয় এবং ভক্তদের দর্শনের জন্য সুন্দর বেশভূষায় সজ্জিত করা হয়। আর তার ঠিক ১৫ দিন পর রথযাত্রার আগের দিন হল নেত্রোৎসব। যাকে ঘিরেও প্রতিবছর অজস্র ভক্তের সমাগম হয়। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের জেরে সমাগমকে দূরে সরিয়ে ব্যবহার করা হল সোশ্যাল মিডিয়া।

নেত্রোৎসব কি?

স্নান যাত্রার পর থেকে ১৫ দিন শ্রী জগন্নাথের দর্শন পাওয়া যায় না। এই কয়েকদিন বিগ্রহের অঙ্গরাগ করা থাকে। আর রথযাত্রার আগের দিন বিগ্রহের নেত্র বা চক্ষুর অঙ্গরাগ করা হয়, যাকেই বলা হয় নেত্রোৎসব। নেত্রোৎসবের পর থেকে আবার সারাবছর জগন্নাথ দেবের দর্শন পাওয়া যায়। ১৫ দিন জগন্নাথ দেবের দর্শন না পাওয়ার পর এই দিনটিতে জগন্নাথের দর্শন পাওয়া যাওয়ায় ভক্তদের কাছে নেত্রোৎসব বলে পরিচিত।

আগামীকাল রথযাত্রা। যে কারণে সোমবার অর্থাৎ আজ নেত্রোৎসব। অন্যান্য জায়গার মত বীরভূমের দুবরাজপুরের হেতমপুরে গৌরাঙ্গ মঠেও প্রতিবছর স্নানযাত্রা হয় মহাসমারোহে। যদিও এবার করোনা ভাইরাসের কারণে ভক্তদের সুরক্ষার কথা ভেবে এবার স্নান যাত্রায় অংশগ্রহণ করে শুধুমাত্র মঠের সন্ন্যাসীরা। রীতি মেনে স্নানযাত্রা করা হয়। এরপর ১৫ দিন জগন্নাথ দেবের দর্শন পাওয়া যায় না। রথের আগের দিন হয় নেত্রোৎসব, রীতি মেনে বাইরে বের করা হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে। এই উৎসব দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন গৌরাঙ্গ মঠে। করোনা ভাইরাসের কারণে এইবার ভক্তদের আসতে বারণ করা হয়েছে, ছিলেন শুধুমাত্র সন্ন্যাসীরা।

গৌরাঙ্গ মঠের সম্পাদক ভক্তি বাড়িদি ত্রিদন্ডী মহারাজ জানান, “যেহেতু ভক্তরা স্নানযাত্রার ১৫ দিন পর অর্থাৎ রথের আগের দিন ভগবানের দর্শন পান তাই এটিকে নেত্রোৎসব বলে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ভক্তদের সুরক্ষার কথা ভেবে ভক্তদের আসতে বারণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে ফেসবুক লাইভ করে ভগবানকে অর্থাৎ জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে ভক্তদের দর্শন করানো সম্ভব হয়েছে।”