করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কী ‘কবচ’ ছিল না! এত বড় দুর্ঘটনা! কী জানা গেল

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের মাটিতে ঘটে যাওয়া ট্রেন দুর্ঘটনার নিরিখে শুক্রবারের করমন্ডল এক্সপ্রেসের (coromandel train accident) দুর্ঘটনা সবচেয়ে বীভৎস। সরকারি সূত্রে সকাল সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত যে খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে মৃতের সংখ্যা ২৬১। আহতের সংখ্যা অগণিত। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে দিন দিন রেল ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু হচ্ছে সেই জায়গায় এত বড় রেল দুর্ঘটনা (Train Accident) কিভাবে ঘটল?

ভারতীয় রেল (Indian Railways) এই মুহূর্তে যে সকল প্রযুক্তির ব্যবহার করছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রযুক্তি হল কবজ (Kavach)। ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি ময়নাগুড়ির দোমহনিতে আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল এবং সেই সময় ৯ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। যে সময় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘটনাস্থলে এসে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়ই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কবচ ব্যবহার করে রেল দুর্ঘটনা আটকে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়।

সেই দুর্ঘটনার পরই কবচ পদ্ধতি চালু বলে জানিয়েছিল রেল এবং তার সঙ্গে সঙ্গে তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, সারা দেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথে আপাতত কবচ পদ্ধতি চালু হবে। এরপরেই প্রশ্ন উঠছে গত শুক্রবারের করমন্ডল এক্সপ্রেসে কি ব্যবহৃত হয়েছিল কবচ প্রযুক্তি? দক্ষিণ-পূর্ব রেল কি আদৌ এখনো পর্যন্ত এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে?

কবচ এমন এক প্রযুক্তি যার মধ্য দিয়ে যদি একই লাইনের মধ্যে দুটি ট্রেন চলে আসে তাহলে তার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন দুটিকে থামিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি দুটি ট্রেনের মধ্যে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা তৈরি হলেও এই প্রযুক্তি নিজে থেকেই কাজ করে ট্রেনকে থামিয়ে দিতে সক্ষম হয়। রেলের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত যে সকল তথ্য দেওয়া হয়েছে তা থেকে কবচ প্রযুক্তি সম্পর্কে এমনটাই জানা যায়। তবে এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব ট্রেনে কবচ থাকা প্রয়োজন বলেই জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মাল গাড়িতে কবচ প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়ে রেলের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।

অন্যদিকে শুক্রবার করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর সূত্র মারফত যা জানা যাচ্ছে তাতে, দক্ষিণ পূর্ব রেল এখনো পর্যন্ত করমন্ডল রুটে কবচ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করতে পারেনি। কবচ বা ‘অটোমেটেড ট্রেন প্রোটেকশন সিস্টেম’ একটি সেন্সরভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। জরুরি পরিস্থিতিতে ব্রেকিং কাজ না করলে বা চালক ট্রেন থামাতে না পারলে এই প্রযুক্তি সংঘর্ষ থেকে বাঁচাবে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি করমন্ডল রুটে এই প্রযুক্তি না থাকার ফলেই কি ঘটে গেল এত বড় দুর্ঘটনা!