-২০ ডিগ্রীতেও জমে না সিকিমের গুরুদংমার লেকের জল, রয়েছে অবাক কারণ

বাঙালির মধ্যে পাহাড়ের জনপ্রিয়তা সর্বদাই তুঙ্গে। তাই দার্জিলিংয়ের পরই বাঙালির জীবনে সিকিমের জনপ্রিয়তা স্থান পেয়েছে। আর এখন সিকিমের অফবিট পাহাড়ি গ্রামগুলোও সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তবু পুরনো সিকিমের প্রতি ভালোবাসা এক ফোঁটাও কমেনি। তাই বছর ১৫-২০ আগেও সিকিমের গুরুদংমার হ্রদ বাঙালির কাছে যেমন জনপ্রিয় ছিল, সেটা আজও ঠিক একই আছে।

গুরুদংমার লেকে যাওয়ার জন্য এখনো পারমিট লাগে। গ্যাংটক থেকে পারমিট বানিয়ে তবেই গুরুদংমা হ্রদ দেখতে যাওয়া যায়। এপ্রিল থেকে মে মাস হল গুরুদংমা লেক দেখতে যাওয়ার আদর্শ সময়। শীতকাল এখানে না যাওয়াই ভাল, কারণ শীতে এখানে তাপমাত্রা থাকে প্রায় -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও কম।

এই সময় লেকের চারিদিক ভরে যায় সাদা বরফের চাদরে। কিন্তু সব চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই হ্রদের জল কখনোই সম্পূর্ণ জমে যায় না। হ্রদের একটি অংশে বরফ জমে না কোনোদিনই। আর জানা যায় এর পিছনে নাকি এক ধর্মীয় কাহিনি লুকিয়ে আছে। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে এই হ্রদ খুবই পবিত্র।

বৌদ্ধ ধর্মের মানুষরা বিশ্বাস করেন যে, একবার এই হ্রদ পরিদর্শন করতে এসেছিলেন বৌদ্ধমহাগুরু পদ্মসম্ভব। তিব্বত থেকে ফেরার পথে তিনি এখানে আসেন। সেই সময় স্থানীয় মানুষদের একমাত্র জলের উৎস এই হ্রদ এবং সেটি প্রতি বছরই প্রবল শীতে জমে যেত, তাই শীতকালে সমস্যায় ভুগতে হতো স্থানীয় মানুষদের। এই জলকষ্টের কথা স্থানীয় মানুষ তখন পদ্মসম্ভবকে জানান। আর তিনি জলের এক অংশ ছুঁয়ে দেন। আর তার স্পর্শ পাবার পর সেই থেকে এই হ্রদের এক অংশ কখনও বরফ হয় না।

আবার, শিখদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই হ্রদটি পরিদর্শন করেছিলেন স্বয়ং গুরু নানক। তাই তাঁদের কাছেও এই হ্রদের ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই হ্রদের জল পান করলে মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর হয়ে যায়। এই হ্রদ নাকি মানুষের ইচ্ছা পূরণ করতে পারে।