‘আমাদের সেনারা আমাদের গর্ব, মারতে মারতে বলিদান দিয়েছেন’ : লকেট চ্যাটার্জী

হিমাদ্রি মণ্ডল : গত সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনাদের উপর রাতের অন্ধকারে চীনা সেনাদের অতর্কিত আক্রমণে শহীদ হন দেশের ২০ জন বীর সেনা। সরকারিভাবে এই সেনাদের নাম প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। আর এই ২০ জন বীর সেনার মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের রাজেশ ওরাং এবং আলিপুরদুয়ারের বিপুল রায়। দীর্ঘ ৪০ দশক পর এইভাবে ভারত-চীন সীমান্তে এত সংখ্যক ভারতীয় সেনাদের প্রাণ হারাতে হলো।

তবে কেবল ভারতীয় সেনারা এই প্রাণ হারিয়েছেন এমনটা নয়, আক্রমণের প্রত্যাঘাতে চীনা সেনাদের দুইজন মেজর, দুইজন ক্যাপ্টেন, চারজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও ৩০-এর বেশী সৈন্য প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আর এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি বৃহস্পতিবার জানান, “আমাদের ভারতীয় সেনারা কেবল বলিদান দেননি, তারা মারতে মারতে মরেছে। তাই এটা আমাদের গর্ব।”

বৃহস্পতিবার বিজেপি সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি বীরভূমের মহঃবাজারের বীর শহীদ রাজেশ ওরাংয়ের বাড়ি আসেন শহীদ সেনা রাজেশের পরিবারের সাথে কথা বলতে। এদিন লকেট চ্যাটার্জি ছাড়াও ছিলেন আরও এক বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। পাশাপাশি ছিলেন বীরভূম বিজেপির সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল, জেলার প্রাক্তন সভাপতি রামকৃষ্ণ মন্ডল সহ অন্যান্য। লকেট চ্যাটার্জি ও সৌমিত্র খাঁ শহীদ সেনা রাজেশের পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের পাশে থাকার সমস্ত রকম প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি এলাকায় যে রাস্তা এই শহীদ সেনার নামে নামকরণ করার দাবি উঠেছে তাও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাবেন বলে জানান।

লকেট চ্যাটার্জি এদিন বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম রাজনীতি ভুলে সকলকে এক হতে হবে। সকল ভারতীয়দের একত্রিত হয়ে চীনের এমন নির্মম আক্রমণের জবাব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে চীন এর জবাব নিশ্চয়ই পাবে।”

তিনি এদিন আরো জানান, “দেশ যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন ভারতীয় সেনাদের করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি দেশকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। আর চীন এই পরিস্থিতিতে নির্লজ্জের মতো আক্রমণ করছে। আমাদের ভারতীয় সেনাদের জন্য আমরা গর্বিত। কারণ তারা এমনি এমনি বলিদান দেননি। যারা শত্রুপক্ষ আছে তাদেরকে মেরেছে। আর মারতে মারতে তারা মরেছে। শত্রুপক্ষকে শেষ করে তারপরেই মরেছে। তাই এই সকল বীরের জন্য গ্রামের নাম রাখা, রাস্তার নাম রাখা, স্কুল কলেজের নাম রেখে তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”

প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যেই শহীদ রাজেশ ওরাংয়ের কফিনবন্দি দেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছানোর কথা ছিল। সেইমতো সমস্ত রকম ব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছিল। তাকে শেষ স্যালুট দেওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আজ তার দেহ এসে পৌঁছাতে পারল না, এসে পৌঁছবে আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল বেলা।