কোথায় করোনা! সামাজিক দূরত্বেরও বালাই নেই, টাকা তুলতে লম্বা লাইন ডাকঘরে

হিমাদ্রি মণ্ডল : মার্চ মাসে ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তেই প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী প্রথম দফায় ২১ দিন ও পরে তা বাড়িয়ে ৩রা মে পর্যন্ত লকডাউন জারি করেন।

আর এই লকডাউন চলাকালীন গরিব মানুষদের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় তিন মাস গরিব কল্যাণ যোজনা প্রকল্পের আওতায় জিরো অ্যাকাউন্টের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা করে দেবে কেন্দ্র সরকার, পাশাপাশি উজ্বলা গ্যাস প্রকল্পে দেওয়া হবে বিনামূল্যে গ্যাস। ঘোষণা মত দফায় দফায় সেই টাকা অজস্র গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে আসতে থাকে। আর তারপরেই বিপত্তি। অ্যাকাউন্টে আসা সেই টাকা তুলতে প্রতিটি জায়গাতেই দেখা গিয়েছে বিশৃঙ্খলা। পড়েছে দীর্ঘ লাইন, আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়নি সরকারি নির্দেশিকা পালন। এই যেন ‘কোথায় করোনা! সামাজিক দূরত্বের বালাইও নেই টাকা তুলতে আসা মানুষদের মধ্যে।’ আর এমন ছবি আবার দেখা গেল বৃহস্পতিবার সিউড়িতে।

এদিন সকাল থেকেই সিউড়ির মূল পোস্ট অফিসের সামনে অজস্র মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার জন্য। ভিড় জমার সাথে সাথে পরে দীর্ঘ লাইন আর ঐ সকল লাইনে কাউকেই দেখা যায়নি করোনা প্রকোপের বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বটুকু বজায় রাখতে। এমনকি সকাল থেকে কোনরকম পুলিশ প্রশাসনেরও দেখা মেলেনি, দেখা মেলেনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য পোস্ট অফিসের তরফ থেকে কোনরকম তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। যার পর এই শহরের নাগরিকরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, ‘এইভাবে চলতে থাকলে আমরা কতদিন সুরক্ষিত থাকবো?’

এখন প্রশ্ন হলো এই সকল মানুষগুলি যারা এভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তারা কি সরকারি সর্তকতা জানেন না? সেই প্রশ্ন করা হলে সটান তাদের থেকে উত্তর মেলে, “সরকার আমাদের ভালোর জন্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলছেন। এখন যেহেতু করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে তাই এটা মেনে চলা উচিত।”

কিন্তু এর পরেই যখন প্রশ্ন করা হয় তাহলে আপনারা মানছেন না কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে কেউ জানান, ‘কেউ মানছে না। সবাই গায়ের উপর এসে চেপে পড়ছে।’ আর কেউ আবার উত্তর কি দেবেন তাই খুঁজে পাননি, ক্যামেরার সামনে থেকে মুখ লুকাতে শুরু করেন। মোটের উপর প্রশাসনিকভাবে এত সচেতনতা বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও, মানুষ বারংবার সেই সকল সচেতনতা বার্তা শোনা জানা সত্ত্বেও তা মানার ক্ষেত্রেই তাদের মধ্যে রয়েছে যত অসুবিধা।