দুর্বল হচ্ছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র, বন্ধ হতে পারে ইন্টারনেট পরিষেবা

নিজস্ব প্রতিবেদন : পৃথিবী নামক গ্রহ যেখানে রয়েছে বিশ্বের সবথেকে বুদ্ধিমান জীব মানুষ। যে কারণে দিনের পর দিন একের পর এক আবিষ্কার অত্যাধুনিক পরিষেবা প্রদান করছে সকলকে। আর এই সকল পরিষেবা মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যেমন মোবাইল পরিষেবা, ইন্টারনেট পরিষেবা আরও কতকি। তবে এই সকল পরিষেবা আগামী দিনে কতটা বহাল থাকবে তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

আসলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর নির্ভর করেই পৃথিবীতে সমস্ত কাজকর্ম হয়ে থাকে। আর এই শক্তির উপর ভর করেই আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি ভূ-পৃষ্ঠে। কিন্তু হঠাৎ করেই জানা গিয়েছে এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একটি অংশে দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু কেন দুর্বল হয়ে পড়েছে তা এখনো জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট ডাটা মারফৎ জানতে পেরেছেন, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। বলাই বাহুল্য, গোটা পৃথিবীটাই একটা বড়সড় চুম্বকের মত। আর তার চৌম্বক শক্তির উপরেই নির্ভর করছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত কাজকর্ম। যে কারণে সেই চুম্বকের শক্তি ক্ষমতা যদি কমতে থাকে তাহলে তা সমূহ বিপদের হাতছানি দিচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ আটলান্টিক অ্যানোমালি নামে পরিচিত অঞ্চলটি গত কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যবর্তী অংশে পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি দুর্বল হচ্ছে। এই ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি’। আর এমন ঘটনায় রীতিমতো চিন্তিত বিশ্বের বিজ্ঞান মহল।

পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি কমলে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে স্যাটেলাইট পরিষেবার উপর। হতে পারে যান্ত্রিক গোলযোগ। বিজ্ঞানীদের কথায় প্রাথমিকভাবে মোবাইল, ইন্টারনেট, স্যাটেলাইট ইত্যাদির মতো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি চৌম্বক শক্তি হ্রাস পাওয়ার কারণে স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে জনজীবন। তবে এক্ষেত্রে আশার আলো একটাই যে, যে গতিতে চৌম্বক শক্তি কমছে সেই গতি অনুযায়ী তা কমতে সময় লাগবে বহু বছর।

বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি কোনদিন যদি শূন্য হয়ে যায় তাহলে এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটাই কঠিন হয়ে যাবে। যে অংশে পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি কমছে সেই অংশে গত ২০০ বছরে ৯% ম্যাগনেটিক ফিল্ড হারিয়েছে। ইএসএএর মতে, চৌম্বক শক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে মেরুর পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। আর এমনটা আগেও হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর এমনটা হয় ২৫০০০০ বছর অন্তর।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর এই চৌম্বক শক্তি রক্ষা করছে মহাজাগতিক রশ্মিকে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এমন এক চৌম্বক ক্ষেত্র যা পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে মহাশূন্য পর্যন্ত বিস্তৃত। ভূপৃষ্ঠে যার আয়তন ২৫ থেকে ৬৫ মাইক্রোটেসলা৷ আর এই শক্তিশালী চৌম্বক শক্তির কারণেই মহা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোটি কোটি রশ্মি থেকে রক্ষা পাচ্ছে এই পৃথিবী।