অভাবকে হারিয়ে মাধ্যমিকে ৬৭০ পাওয়া মিত্রার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া

Madhab Das

Published on:

Advertisements

লাল্টু : বাবা একজন গৃহশিক্ষক, তাও আবার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের। মা আই.সি.ডি.এস কর্মী। পাড়া গাঁয়ে টিউশনি থেকে রোজগার আর কতইবা! সেখান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চলে। কিন্তু মেয়ের স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। কারণ মেয়ে যে এবার মাধ্যমিকে পেয়েছে ৭০০-এর মধ্যে ৬৭০। ফলাফল যেন আরও কিছুটা দ্বিধায় ফেলেছে বাবা ও মা দুজনকেই। অভাবের সংসার থেকে মেয়ের এমন লড়াই, অন্যদিকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

Advertisements

Advertisements

কৃষ্ণপুর গ্রামের মিত্রা দাস এবছর মাধ্যমিকে কেন্দ্রগড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ। ফলাফলের দিক থেকে নজর কেড়েছে এলাকায়, আর অভাবের সংসার থেকে এমন লড়াই করে উঠে আসা বীরাঙ্গনা নজর কেড়েছে রাজ্যের বাসিন্দাদের। বরাবরই পড়াশোনায় যথেষ্টই ভালো মিত্রা বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯০, অঙ্কে ১০০, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৬, জীবনবিজ্ঞানে ৯৬, ইতিহাসে ৯৪, ভূগোলে ৯৮ পেয়েছে। আর এই এত ভাল ফলাফলের জন্য তাকে নিতে হয়নি কোনরকম গৃহশিক্ষকও। একমাত্র বাবাই গৃহশিক্ষক থেকে সবকিছু। এর পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সহযোগিতা।

Advertisements

স্বপন দাস মহাশয়ের দুশ্চিন্তা, ভালো ফল করেও যদি মেয়ের পড়াশুনাটা বন্ধ হয়ে যায়! এখন সেই চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁর মাথায়। স্বপন দাস জানিয়েছেন, পাড়া গাঁয়ে টিউশনি করে খুবই কম আয় হয়, তাও মেয়ে দশম শ্রেণিতে ভর্তির সাথে সাথে ওকে গাইড করব বলে টিউশনটাও কমিয়ে দিয়েছি। জানি না মেয়েটাকে কতদূর পড়াতে পারব! বিজ্ঞান নিয়েই পড়াশুনা করে এগিয়ে যেতে চায় মেয়ে। মেডিক্যালের প্রবেশিকায় বসতে চায়।

মিত্রা জানিয়েছে, আমাদের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। জানি না, কতদিন এভাবে চালিয়ে যেতে পারব। সাহায্য পেলে খুব ভালো হয়।

গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক সুকান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, আমাদের গ্রামের অন্যতম কণ্যারত্ন এত নম্বর পাওয়ায় খুশি হয়েছেন আপামর গ্রামের সকলেই।আমাদের গর্বের ছাত্রী দুঃস্থ এবং মেধাবী। উনার এও বক্তব্য, “পড়াশুনা চালিয়ে গেলে এখন রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী প্রকল্পে ভাতা দিচ্ছে। ফলে যত কষ্টই হোক, পড়াশুনাটা চালাতেই হবে। আমার আশা, সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রত্যন্ত গ্রাম্য প্রতিভার সুবিকাশে আমাদের কণ্যারত্ন মিত্রার পরিবারের পাশে থাকবে।”

Advertisements