দেশে করোনা বৃদ্ধির মেন নায়ক মোদি সরকার: অনুব্রত, পাল্টা বিজেপি

অমরনাথ দত্ত : দেশে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। আর এই সংক্রমণ বুধবারের রিপোর্ট অনুযায়ী পৌঁছে গেছে ২ লক্ষ ৭ হাজার ৬১৫ তে। আর এই বিপুল পরিমাণ সংক্রমণ বাড়ার জন্য বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দায়ী করলেন কেন্দ্র সরকার মোদি সরকারকে। পাশাপাশি তিনি আমফান ও রেশনবন্টন নিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তোলেন। অনুব্রত মণ্ডলের এই সকল অভিযোগ নিয়ে পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও।

বুধবার বোলপুর বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সাংবাদিক বৈঠকে জানান, “একদিকে করোনা আর অন্যদিকে আমফান, যেভাবে পশ্চিমবঙ্গকে শেষ করেছে সেখানে বিজেপির মিথ্যাবাদী সরকার একটুকু হেল্প করে নাই। কোন সাহায্য করার বেলায় নাই, মাত্র এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। আর তারপর থেকেই সবটাই মিথ্যা কথা বলে চালাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত রেশনের চাল দিতে পারে নাই। সবটাই বিজেপি মিথ্যা কথা বলে চালাইছে। আর এই আমফানের ক্ষতি মমতা ব্যানার্জি একাই সামলাচ্ছেন। খাওয়া-দাওয়া ঘুম ছেড়ে দিয়ে ছুটে চলেছেন এখান থেকে ওখানে।”

এরপরেই তিনি দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার জন্য মোদী সরকারকে দায়ী করে জানান, “গোটা ভারতবর্ষে জুড়ে যে করোনা বাড়ছে তার জন্য দায়ী মোদি সরকার। আমি বারবার বলেছিলাম লকডাউনের আগে যদি এই মোদি সরকার পাঁচদিন গোটা ভারতবর্ষজুড়ে ট্রেন চালিয়ে দিত তাহলে আজ কিন্তু করোনা থাকতো না। ভারতবর্ষে দু লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে করোনা, এই করোনা কিন্তু বৃদ্ধি পেত না। এই করোনা বৃদ্ধি পাওয়ার মেন নায়ক মোদি সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকরা যারা বাইরে গিয়েছিল তাদের কষ্ট দুর্ভোগের জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদি। যদি সব রাজ্য থেকে পাঁচ দিন চালাতো তাহলে আজ কিন্তু এত কষ্ট হতো না।”

এছাড়াও তিনি কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, “মাস্ক, কিট এসব কিছুই দেয়নি কেন্দ্র সরকার। সবটাই ভাওতাবাজি করে চালাচ্ছে এই কেন্দ্র সরকার। নরেন্দ্র মোদি সরকার এখনো মিথ্যা কথা বলছে। আমরা পুরাতন ছাপান্ন হাজার কোটি টাকা পাব। সেই ৫৬ হাজার কোটি টাকা প্লাস এ বছরের ১৬ হাজার কোটি টাকা র ভিতরে দশটা টাকাও এখনো পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি দেয় নাই। আর সেখানে মমতা ব্যানার্জি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এক টাকা, দু টাকা, দশ টাকা, পঞ্চাশ টাকা নিয়ে সকলের উপকারে লেগে গেছেন।”

পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এদিন বলেন, “আমি প্রত্যেকটা ব্লকের সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি সবাইকে বলে দিয়েছি পরিযায়ী শ্রমিকদের যেন কোন রকম অসুবিধা না হয়। তারা কাজ না পেলে তাদের কাজ দেবে, খেতে না পেলে খাবার দেবে। সব সময় সকলকে নজর রাখতে বলেছি। আর তাতেও যদি না হয় আমাকে ফোন করবেন, আমি ব্যবস্থা করে দেব।”

আর বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই সকল মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল জানিয়েছেন, “অনুব্রত বাবু সীমা কত দূর? যে উনি কেন্দ্রের ভুল ধরতে যাচ্ছেন।কেন্দ্র যদি রেশনের চাল না পাঠিয়ে থাকে তাহলে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি থেকে কি করে এফসিআই লোগো লাগানো চালের বস্তা বের হচ্ছে। ও তো নিজেই একদিন বলেছিল কেন্দ্র খারাপ চাল পাঠিয়েছে। আর এখন আবার বলছি দেয়নি! পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যদি ট্রেন না চালায় তাহলে অন্যান্য রাজ্যের পরিচয় শ্রমিকরা কি করে বাড়ি ফিরছেন? কেবলমাত্র বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরতে পারছেন না। কারণ দিদি ট্রেনের অনুমতি দিচ্ছেন না। পশ্চিমবঙ্গে যেদিন বাজার খুলে ছিল সেদিন কি কেন্দ্র সরকার বলেছিল বাজার খুলতে হবে? তাহলে করোনা টা বাড়াচ্ছে কে? ও না মোদি সরকার?”