‘এত রাগ কিসের দিদি’, ভোটের মোদির ভাষণের ২০টি পয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলার সিংহাসন দখলের লড়াইয়ে শাসক এবং বিরোধী শিবিরের প্রতিটি দল উঠে পড়ে লেগেছে। গত সপ্তাহেই ব্রিগেড সমাবেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমর্থন পেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে দিয়েছিল সংযুক্ত জোট বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ। আর আজ অর্থাৎ আরেক রবিবার তাদের পাল্টা ব্রিগেডে লোকসমাগম করে শাসক এবং সংযুক্ত জোট ২ শিবিরকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো বিজেপি। রবিবার গেরুয়া শিবিরের এই ব্রিগেড সমাবেশের মধ্যমণি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হলেও MLA ফাটাকেষ্ট মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তিনিও যেন জমিয়ে দিলেন ব্রিগেডের ময়দান।

অন্যদিকে ব্রিগেড ময়দানে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমেই বলে ওঠেন ‘এত মানুষের ভিড় আগে দেখিনি’। এর পরেই তার বক্তব্য শুরু করতেই একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি শাসকদল তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া আক্রমণ করেন। তবে এদিন মোদির আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু কেবলমাত্র তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না, একইভাবে কংগ্রেস ও শিবিরকেও আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু করে তোলেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য ২০টি পয়েন্ট।

১) বাংলার মানুষ পরিবর্তনের জন্য দিদির উপর ভরসা করেছিল। কিন্তু দিদি, আর তার ভাই, ভাইপোরা আপনাদের এই ভরসা ভঙ্গ করেছে।

২) বাংলা শান্তি চায়, বাংলা চায় পরিবর্তন। বাংলা কখনও পরিবর্তনের আশা ছাড়েনি।

৩) বাংলা চায় উন্নতি, বাংলা চায় শান্তি, বাংলা চায় প্রগতিশীল বাংলা, বাংলা চায় সোনার বাংলা।

৪) আজ ব্রিগেডের ভীড় প্রমাণ করে দিচ্ছে যে আর দেরি নয়। বিজেপি সরকার আসবেই। আজকের এই ভীড় দেখে মনে হচ্ছে যেন আজই ২রা মে।

৫) পরিশ্রম করে কাজ করবো। পরিশ্রমে কোন ফাঁক রাখবো না। প্রতি মুহূর্ত আপনাদের জন্য বাঁচবো। প্রতি মুহূর্ত আপনাদের সেবা করে যেতে চাই।

৬) আজ আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি বাংলায় যে পরিবর্তন হবে তা হলো কৃষকদের জন্য, বাংলার মা-বোনেদের জন্য, শিল্পপতিদের জন্য। আর এই পরিবর্তনের জন্য আমি ২৪ ঘন্টা নিরলস প্রয়াস করবো।

৭) আসল পরিবর্তন মানে এমন পরিবর্তন যেখানে মানুষকে পালতে হবে না। আসল পরিবর্তন মানে এমন পরিবর্তন, এমন বাংলা যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, বেশি বিনিয়োগ হবে। আসল পরিবর্তন মানে এমন পরিবর্তিত বাংলা যেখানে একবিংশ শতাব্দীতে দারিদ্র্যসীমা হ্রাস পাবে।

৮) কাউকে কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না। সবক্ষেত্রে উন্নয়নে নজর দেওয়া হবে। অনুপ্রবেশকারীদের রুখে দেওয়া হবে। তোষণের রাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

৯) পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে সেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

১০) কলকাতাকে সিটি অফ জয় বলা হয়। আর এই কলকাতাকে সিটি অফ ফিউচার করা হবে।

১১) স্বাধীনতার পর থেকে বাংলায় ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির করা হচ্ছে।

১২) এক সময় বামেরাই বলেছিল কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও। আমি জানতে চাই বামেরা কংগ্রেসের যে হাতকে কালো বলেছিল সেই হাত কি আজ সাদা হয়ে গেল?

১৩) মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দিয়ে মমতা দিদি ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু বাংলায় কি পরিবর্তন হয়েছে? বাংলার স্কুল-কলেজের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়েছে? যুব সমাজের কর্মসংস্থান হয়েছে? কোন উদ্যোগপতি এসেছে?

১৪) দিদি ভাগ্যিস স্কুটি থেকে পড়ে যান নি। তাহলে যে রাজ্যে ওই স্কুটার তৈরি হয়েছে সেই রাজ্যকে শত্রু ভেবে বসতেন।

১৫) দিদি এখন বলছেন খেলা হবে। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই কোন খেলাটা আপনি বাকি রেখেছেন? দুর্নীতি, সিন্ডিকেট। এমনকি আমফানের টাকাও আপনি লুট করেছেন।

১৬) ভয় না পেয়ে বাংলাকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য নির্ভয়ে ভোট দিন। বাংলাকে দুর্নীতিমুক্ত করুন।

১৭) আমি দিদিকে বহু বছর ধরে চিনি। এই দিদি সেই দিদি নন, যিনি বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। এখন দিদির নিজের উপরেই কন্ট্রোল নেই। উনার রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।

১৮) আমাকে কখনো রাবণ, কখনো গুন্ডা বলছেন। কথায় কথায় গাল, দিদি এত রাগ কিসের? আপনি গণতন্ত্রের বদলে লুঠতন্ত্র চালু করেছেন। আপনার দল পাঁকে দাঁড়িয়েছে। আপনার ব্যর্থতায় বাংলায় পদ্ম ফুটবে।

১৯) বাংলার মানুষ এখন নিপীড়িত। বাংলার মানুষকে তাদের চোখের সামনে নিজেদের প্রিয়জনকে খুন হতে দেখতে হচ্ছে। চিকিৎসার অভাবে মরতে হচ্ছে। তাই তারা এবার বাংলা বলছে আর নয় অন্যায়।

[aaroporuntag]
২০) আমরা প্রতি মুহূর্তে আপনাদের জন্য বেঁচে থাকবো। প্রতি মুহূর্তে আপনাদের স্বপ্নের জন্য বেঁচে থাকবো। শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় আপনাদের মন জয় নয়, প্রতি মুহূর্তে আপনাদের মন জয় করবো আমাদের পরিশ্রমের দ্বারা।