‘১৫ মাসের মধ্যে এরাজ্যে নির্বাচন, তৃণমূল ৩০ টার বেশি সিট পাবে না’ : মুকুল রায়

মমতা ব্যানার্জি অশিক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী, নানুর এসে বললেন মুকুল রায়

অমরনাথ দত্ত : এদিন বিজেপির নিহত কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের নানুরের বাড়িতে গেলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। নিহত পরিবারের হাতে তুলে দিলেন আর্থিক সাহায্য, কথা দিলেন পরিবারের পাশে থাকার। স্বরূপ গড়াইয়ের স্ত্রীর দাবি, আমিও সারা জীবন সঙ্গে থাকবো বিজেপি নেতৃত্বের। পাশাপাশি জানালেন সিবিআই দিয়ে তদন্ত করে দেখা হোক কারা খুন করেছে আমার স্বামীকে। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করুক পুলিশ।

স্বরূপ গড়াইয়ের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ এবং মমতার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ মুকুল রায়ের। তিনি জানান, “শহীদ পরিবারের লোকজনদের দেখতে দেখতে আমার চোখের জল শুকিয়ে যাচ্ছে। সারা বাংলায় শ্মশান আর কবরস্থান দেখতে দেখতে চোখের জল শুকাচ্ছে। টেনে আনলেন স্বরূপ গড়াইয়ের মৃতদেহ নিয়ে নাটকের প্রসঙ্গ। পাশাপাশি তিনি বলেন, “বীরভূম জেলায় গত এক বছরে তৃণমূলের আক্রমণের ফলে মৃত্যু হয়েছে নয় জন বিজেপি কর্মীর।”

মমতা ব্যানার্জি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বীরভূম পুড়ছে, বাংলা পুড়ছে আর উনি ছবি আঁকছেন, গান গাইছেন।”

এরপর এনআরসি প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, “এত অশিক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় আগে কখনো দেখেনি। আমরা প্রফুল্ল সেনকে মুখ্যমন্ত্রী দেখেছি, প্রফুল্ল ঘোষকে মুখ্যমন্ত্রী দেখেছি, বিধান চন্দ্র রায়কে মুখ্যমন্ত্রী দেখেছি, দেখেছি জ্যোতি বসুকে। কাউকে বলতে শুনিনি যে লন্ডনে সেলিকিডস বাইরান এবং রবীন্দ্রনাথের মিটিং হয়েছিল। আমরা কোনদিনও শুনিনি রামমোহন রায় এই বিধানসভার সদস্য ছিলেন, আমরা কোনদিনও শুনিনি যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফলের রস খাইয়ে গান্ধীজিকে অনশন ভাঙিয়ে ছিলেন। সুতরাং অশিক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী এটা বাংলার জন্য অত্যন্ত কলঙ্ক এবং লজ্জাজনক অধ্যায়।”

রাজীব কুমার প্রসঙ্গে “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে? মমতা ব্যানার্জি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে মমতা ব্যানার্জি! সরকারি কাজে বাধা দিলে বিভিন্ন লোকের মামলা হয়, সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে। সেখানে যেভাবে সিবিআই আধিকারিকদের গলাধাক্কা দিয়ে তুলে নিল তাহলে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে মামলা হবে না কেন! যারা রাজিব কুমারের হয়ে ধর্নায় বসলেন কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না!” প্রশ্ন তুললেন মুকুল রায়।

পর মুহূর্তেই বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে উদ্দেশ্যে করে বলেন, “শুনে রাখুন ১৫ মাস আর বাকি আছে নির্বাচনে, আইনের শাসন বলবৎ রাখুন। নভেম্বর মাস থেকে ইলেকশন মুড অফ কন্টাক্ট শুরু হয়ে যাবে থাকতে পারবেন না বীরভূমে!”

বীরভূম প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্যও শোনা গেল আজ। বলেন, “এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জেলা, এখানে বাউল গানের আসর বসে, জয়দেবের মেলা হয়। বীরভূমের মানুষ শান্ত প্রিয়। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে বীরভূমের ঘরে ঘরে বোমা, যেখানে সেখানে বাড়ি, অফিস উড়ে যাচ্ছে বোমাবাজিতে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে বীরভূম।” পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলকে টেনে বলেন, “আমাদের জেলা সভাপতি অত্যন্ত ভদ্র লোক। পুলিশ প্রশাসনের কোন চক্ষুলজ্জা নেই, একজন জেলা সভাপতি বসে আছে তাকে অনুরোধ না করে জোড় করে তুলে নিয়ে গেলেন। ১৫ মাস পর মন্ত্রী হবে তখন তো স্যালুট করবেন।”

আর সবশেষে বলেন, “মমতা ব্যানার্জি এরাজ্যে ৩০ টার বেশি সিট পাবেনা বিধানসভায়।”