কিসের টানে দুর্গম পথ পেরিয়ে ভক্তরা ছুটে আসেন বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের কাছে রহস্যময় গুহায়

হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে (Vaishno Devi Temple)। জম্মু-কাশ্মীরের কাটরাতে (Katra) অবস্থিত এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু আশ্চর্য ঘটনা। তার মধ্যে একটি হলো এখানে স্থিত রহস্যময় গুহা।

বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে (Vaishno Devi Temple) প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ ভক্তরা আসেন পুজো দেওয়ার জন্য। ভারতের পৌরাণিক ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতের দক্ষিণে অবস্থিত একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ত্রিকুটা। রত্নাকর সাগর এবং তাঁর স্ত্রী বিয়ের পর নিঃসন্তান ছিলেন। দীর্ঘদিন সন্তানের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। অবশেষে তাঁদের কোলে জন্ম নেয় এক কন্যাসন্তান। এই কন্যাসন্তানের জন্মের পরেই তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন যে সন্তানের ভবিষ্যতের উপর কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবেন না তাঁরা। পরবর্তীকালে এই কন্যাসন্তান বৈষ্ণোদেবী নামে পরিচিত হয় সকলের কাছে।

জানা যায়, ত্রিকুটা রামের নির্দেশে গুহার মধ্যে থাকতে শুরু করেন এবং সেখানে তাঁর নিরাপত্তার জন্য তাকে শ্রীরাম একটি সিংহ, হনুমান ও তীর-ধনুক দেন। ত্রিকুটা ওই গুহায় থাকতেন সেই কারণে ওই পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে ত্রিকূট। তবে কিভাবে দেবী এই দুর্গম গুহায় থাকতে শুরু করেছিলেন তা নিয়ে আজও পর্যন্ত রহস্য রয়েছে।

জানা যায়, এই মন্দিরের মধ্যে রয়েছে তিনটি গুহা। তবে এই মন্দিরগুলির মধ্যে একটি গুহা বছরে বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকে। সাধারণত, ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত খোলা থাকে গুহার দরজা। কোনও কোনও বছর তা বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। আবার মার্চে হোলির আগে খোলা হয় গুহার দরজা। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, হাজারের কম দর্শনার্থী হলে গুহার দরজা খোলা হয় না। তার থেকে বেশি পুণ্যার্থী এলে তবেই খোলা হয় গুহার গেট।

আগে বৈষ্ণোদেবী মন্দির (Vaishno Devi Temple) সংলগ্ন ওই গুহায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে কোনও রাস্তা ছিল না। পাহাড় বেয়ে পৌঁছত হত ওই গুহায়। কিন্তু পরবর্তীকালে ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সরকারের তরফে রাস্তা তৈরি করা হয়। ১৯৭৭-তে তৈরি হয় ওই রাস্তা। যা আজও ব্যবহার করছেন পুণ্যার্থীরা।