বোট, পিরামিড আরও কতকি! একেবারে নতুন সাজে নীল নির্জন

গৌড় চক্রবর্তী : নতুনভাবে সেজে উঠছে বীরভূমের বক্রেশ্বর জলাধার। বোট ছাড়াও নতুনভাবে নীল সাদা রং করার পাশাপশি বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য ময়ূর, গরিলা, পেঙ্গুইন আঁকা হয়েছে দেওয়ালে। আর আপনিও যদি পিরামিডের দেশে এখুনি যেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে আসতে হবে এই জলাধারে। কোথাও রকমারি ফুলের বাহার তো কোথাও আবার সবুজ ঘাসের চাদর। এমনকি কর্তৃপক্ষর তরফ থেকে পুরো এলাকায় প্লাস্টিক বর্জিত করার জন্য লাগানো হয়েছে বিভিন্ন বোর্ড। যুবক যুবতীদের এখানে এসে সেলফির পাশাপশি চলছে টিকটক ভিডিও আপলোড করার হিড়িকও।

শুরুতেই এই জলাধারকে সাজাতে নেওয়া হয়েছিল একগুচ্ছ পরিকল্পনা। গড়ে উঠেছিল নীল নির্জন রিসোর্ট। তাছাড়াও ফ্লোটিং ভিলেজ বা জলে ভাসমান হোটেল, বোটিং-এর পাশাপশি শুটিং স্পট তৈরি সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল পিডিসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই লক্ষ পূরণে ২০০৪ সালে একটি নীল নির্জন পার্কও গড়ে তোলা হয়। কিন্তু পার্ক গড়লেও নজরদারির অভাবে কিছুদিনের মধ্য তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও জানা যায়, তখন একদিকে যেমন এলাকার বেকার যুবকদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরীর দাবীতে জলাধার উন্নয়নে বাধা দেওয়া হয়, তেমনই উক্ত পার্কটি কিছুদিনের মধ্য দুস্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠে। আর দুস্কৃতীদের অত্যাচার থেকে রেহায় পেতে নীলনির্জন পার্ককে ভেঙ্গেও ফেলা হয়।

তবে এতৎসত্ত্বেও ডিসেম্বর কিম্বা নতুন বছরের শুরুতে পিকনিকের জন্য জেলার অন্যতম স্পট হিসাবে ভীড় হয় এই জলাধারে। ভৌগোলিক কারণে এবং যোগাযোগের সুবিধার জন্য এখানে অনেক পর্যটক শীতের আমেজে চড়ুইভাতি করতে আসেন। তাছাড়াও শীতকালে চিন, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া থেকে পরিযায়ী পাখিদের ঠিকানা হয় এই জলাধার। পরিযায়ী পাখি দেখতে ভিড়ও উপচে পড়ে। বর্তমানে পাখিদের সুরক্ষায় নজরদারিও চালাচ্ছে বন দফতর। তাই ফের এই জলাধারকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন এবং পিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। তাই আবারও সাজতে চলেছে এই জলাধার। আগের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যাও এবং বলাবাহুল্য, সময়ের সাথে সাথে পরিবেশের প্রভূত পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং এবার সতীপীঠ তারাপীঠ এবং বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণের পর জেলার মানচিত্রে এই জলাধার যে অন্যতম আকর্ষণের বিন্দু হতে চলেছে তা বলাইবাহুল্য।