লকডাউনকে উপেক্ষা করে রাস্তায়, ২৪ ঘন্টায় গ্রেপ্তার ৩৮৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন জারি হয়েছে। আর এই লকডাউন চলবে আগামী ১৪ ই এপ্রিল রাত্রি ১২ টা পর্যন্ত।লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম দিকে পুলিশের কড়া হস্তক্ষেপে বহু মানুষ গৃহবন্দী হয়। কিন্তু দিন দুয়েক পর রাশ একটু লাঘব হতেই মানুষের রাস্তায় রাস্তায় বেরোনোর প্রবণতা বাড়তে শুরু করে। যে কারণে যে উদ্দেশ্যে এই লকডাউন তা কতটা সফলতা পেতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

তবে পুলিশ এর মাঝে ব্যানার-ফেস্টুন ছাড়াও রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে, ছবি এঁকে সাধারণ মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করে। কিন্তু ফলাফল! বেশ কিছু মানুষের কাছে এসকল বার্তা যেন ছেলেখেলামোতে পরিণত হয়। হাতে থলি নিয়ে বাজার করার অজুহাতে, পকেটে কাগজ নিয়ে অজুহাত দেখিয়ে একবার ঘুরে আসার চেষ্টা চলতে থাকে। এমনকি রাস্তায় দেখা যায় টোটো ও অটো। যার পরেই আবার নড়েচড়ে বসে রাজ্য পুলিশ। শুরু হয় ধরপাকড়।

শুক্রবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য পুলিশ নাকা চেকিংয়ের পাশাপাশি শহরের মাঝেও শুরু করে ধরপাকড়। লকডাউনকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নামা ব্যক্তিদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়। শুধু কারণ জানালেই হবে না, কারণের উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে। আর যাঁরাই এই প্রমাণ দিতে অক্ষম হন তাঁদেরই গ্রেপ্তার। ঠিক এরকম অভিযান চালিয়ে রাজ্য পুলিশ মাত্র ২৪ ঘন্টায় ৩৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। আটক হয় ৫২ টি গাড়ি, পাশাপাশি ৫৩ টি অভিযোগ দায়ের হয়।

আর এই ঘটনার কথা তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সকলকে আবারও সতর্ক করে জানিয়েছে, “লকডাউন বিধিনিষেধ কার্যকর করতে WBP গত ২৪ ঘন্টায় ৩৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, ৫২ টি গাড়ি আটক করেছে এবং ৫৩ টি এফআইআর করেছে।
পুলিশ কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
দয়া করে আপনাদের বাড়ির সুরক্ষায় থেকে আমাদের সাহায্য করুন।
দয়া করে সহযোগিতা করুন। StayHomeStaySafe”

এছাড়াও রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, “সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো, জাল খবর অথবা আপত্তিকর কোনো সামগ্রী পোস্ট থেকে বিরত থাকুন। গত কয়েকদিনে এরকম ১৪৫ টি ঘটনাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জনকে আর সনাক্ত করা হয়েছে ৯৮ জনকে।”

মোটের উপর বলাই বাহুল্য যে কারণে এই লকডাউন অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শৃঙ্খলকে ভেঙে দেওয়া, সেই কারণের ফলাফল যদি না পাওয়া যায় তাহলে এই লকডাউনের কোন তাৎপর্য থাকেনা। আর এই লকডাউনকে সফল করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পাশাপাশি সর্বদা সচেষ্ট রাজ্য পুলিশও। কিন্তু কিছু অসচেতন ব্যক্তির কারণে বিপদে পড়ছেন ওই ব্যক্তি নিজে, ওই ব্যক্তির পরিবার ও আরও ১০ জন। সুতরাং সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলুন, বাড়িতে থাকুন, সুস্থ থাকুন।