করোনা প্রতিষেধকের সন্ধান ব্রিটেনে, পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদন : মারণ ভাইরাস করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র পথ করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণাগারে চলছে এ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কিছুটা আশার কথা শুনিয়েছেন ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য প্রতিষেধক তৈরির কাজে অনেকটাই সফল তাঁরা বলে জানা যাচ্ছে। তবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের পর তার প্রতিক্রিয়া না দেখা পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে আশা যাবে না বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে করোনা ভাইরাসের এই পরীক্ষামূলক প্রতিষেধক মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এই প্রতিষেধকটি তৈরির কাজ করছে জেনার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ড প্রতিষেধক গ্ৰুপ। সরকারের পক্ষ থেকে আরও ২০ লক্ষ পাউন্ড মঞ্জুর করা হয়েছে যাতে এই প্রতিষেধক তৈরির কাজ দ্রুত সম্পন্ন হয়। মঞ্জুরি টাকার সমস্তটা ব্যয় করা হবে সুস্থ বাচ্চা থেকে বয়স্কদের এই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার জন্য বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির পেডিয়াট্রিক, ইনফেকশন ও ইমিউনিটির প্রধান পরীক্ষক অ্যান্ড্রু পোলার্ড।

সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, এই প্রতিষেধক প্রথমে কিছু যুবক যুবতীর শরীরে দেওয়া হবে। যদি সাফল্য আসে তাহলে অনান্য বয়সের মানুষের ওপর এর প্রয়োগ করে দেখা হবে। তার জন্য তাদের টিম লক্ষাধিক পরীক্ষামূলক এই প্রতিষেধক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

এই প্রতিষেধক তৈরি যে সময় সাপেক্ষ তা মেনে নিয়েছেন ব্রিটেনের বিজ্ঞান বিষয়ের প্রধান পরামর্শ দাতা স্যার পাট্রিক ভ্যালেঞ্চি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিষ্কার করা ওই পরীক্ষামূলক প্রতিষেধকের নাম, Chad0x1 nCoV-19 (recombinant viral vector viccine)। একটা ডোজেই শরীরে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে এই ভ্যাকসিন বলে জানাচ্ছেন ল্যাবের গবেষকরা।

গবেষণায় যুক্ত অধ্যাপক সারা গিলবার্ট জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষা ক্রমাগত চালাতে হবে, তবে বিশেষ টেকনোলজিক্যাল পদ্ধতিতে তাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে যা কোভিড-১৯ কে দ্রুত পরাজিত করবে।

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসও জানান, কোন প্রতিষেধক সবচেয়ে বেশি কাজ করবে এখনও আমরা জানিনা তবে এটা তৈরি করতে প্রয়োজন হবে ইউনিক টেকনোলজি। তার জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রকে এই প্রতিষেধক তৈরিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে বিভিন্ন রকম ওষুধ নির্মাণের উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। লক্ষাধিক ওষুধ তৈরির প্রয়োজন পড়বে যার জন্য দরকার হবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার।

এছাড়াও G20 দেশগুলোর প্রতিষেধক তৈরির কোন পরিকাঠামো নেই যা বিপদ বাড়াতে পারে এই দেশগুলিতে। তবে এই প্রতিষেধক সফলতা লাভ করলে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের আপোদকালীন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত। প্রতিষেধক কাজ না করলে ব্যর্থ হতে পারে এই পুরো পরিকল্পনার কাজ। যদিও প্রতিষেধকের সাফল্য লাভ করার জোর সম্ভবনা আছে বলেই মনে করছে গবেষক দলের।