ইনিও পঞ্চায়েত প্রধান, তবে থাকেন টিনের চালা ঘরে

নিজস্ব প্রতিবেদন : নেতা মন্ত্রীদের দুর্নীতি নিয়ে বছরে পর বছর ধরে অভিযোগের কমতি নেই। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল আমলে এই দুর্নীতি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ার এত অভিযোগের মাঝেই তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত প্রধানের খোঁজ পাওয়া গেল যিনি পঞ্চায়েত প্রধান হয়েও থাকেন টিনের চালা ঘরে।

এমন একজন পঞ্চায়েত প্রধানের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বীরভূমের ইলামবাজারে। বীরভূমের ইলামবাজারের বছর ৩৫ এর ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত প্রধান হলেন মালতি বিশ্বাস। তিনি এখন পঞ্চায়েত পরিচালনার দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি সংসারের সমস্ত কাজ করেন। তিনি নিজের হাতে বিভিন্ন জনের সরকারি প্রকল্পের বাড়ি ঘরের আবেদনে সম্মতি দিলেও নিজের জন্য একটি সরকারি প্রকল্পের বাড়ি যোগাড় করতে পারেননি।

ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের এটাপুর গ্রামের বাসিন্দা মালতি বিশ্বাস পঞ্চায়েতের সমস্ত দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি নিজের ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব সামলান। বাড়িতে রান্না করা থেকে শুরু করে বাসন মাজা সমস্তটাই নিজে করেন। এর পাশাপাশি তিনি তার স্বামীর সহযোগিতার জন্য মাঠে চাষের কাজে সাহায্য করেন। তাদের সংসার এতটাই কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যে তাদের বাড়ি দেখলেই বোঝা যায়।

বাড়িতে কিছু নেই বললেই চলে। বাড়িটি পুরোপুরি ভাবেই তৈরি হয়েছে টিন দিয়ে। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা এই টিনের বাড়িতেই তাদের রাত কাটে। তবে একজন পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে এইভাবে কষ্ট করে জীবন যাপন কেন করছেন? কেন নিজেদের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করাচ্ছেন না? এই প্রশ্ন করা হলে মালতি বিশ্বাস এবং তার স্বামীর উত্তর, ‘বাড়ি তৈরি করার ইচ্ছে আছে তবে সামর্থ্য নেই।’

এই কথা শোনার পর তাদের প্রশ্ন করা হয়, এখন তো তৃণমূল নেতা হওয়া মানেই টাকার খেলা? তাহলে আপনারা কেন এইভাবে দিন কাটাচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তাদের থেকে শোনা যায়, ‘জীবনে বাড়ি হবে না তাও ঠিক আছে কিন্তু পাপের টাকায় সহ্য হবে না। বাড়ি না হোক তাও ঠিক আছে কিন্তু ওই সব হবে না।’

মালতি বিশ্বাসের এমন পরিশ্রম নিয়ে ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব গোপীরারঞ্জন পাল জানিয়েছেন, “উনি বাড়ির সমস্ত রকম কাজকর্ম মাঠে চাষ বাস সামলানোর পাশাপাশি নিষ্ঠার সঙ্গে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব সামলান। তার কাজের চাপ এতটাই থাকে যে মাঝে মাঝে আমাদেরও কোন জরুরী কাগজপত্রে স্বাক্ষর করানোর জন্য মাঠে ছুটে যেতে হয়।”