বীরভূম থেকে সোজা আমেরিকা, স্পেশাল অলিম্পিক্সের ফুটবল প্রতিযোগিতায় সুযোগ আদিবাসী তনয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদন : ফুটবলকে ভালোবেসে লাগাতার পরিশ্রমের ফল পেলেন বীরভূমের এক আদিবাসী তনয়া। স্পেশাল অলিম্পিক্সে ২০ সদস্যের ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আগামী জুলাই মাসে আমেরিকার মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরে আয়োজিত হতে চলেছে এই স্পেশাল অলিম্পিক্স। সেখানেই খেলতে দেখা যাবে বীরভূমের এই আদিবাসী তনয়াকে।

স্পেশাল অলিম্পিক্সের ভারতের ইউনিফাইড ফুটবল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার এই সুযোগ পেয়েছেন বীরভূমের সিউড়ী এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত নগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁটাবুনি গ্রামের আদিবাসী তনয়া পাপিয়া মুর্মু। তিনি সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এই দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য একাধিকবার ট্রায়াল দিতে হয় তাকে। সেই সকল ট্রায়ালে সফলতা অর্জন করে জাতীয় দলে সুযোগ পান।

সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা পাপিয়া প্রথম দুটি ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করে যোগ্যতা অর্জনের পর চলে যান গুজরাতে আয়োজিত ক্যাম্পে। সেই ক্যাম্পেও যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি। তারপরেই সুযোগ পান জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার। আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে তাকে দেখা যাবে বিদেশের মাটিতে ভারতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে।

পাপিয়া ছোট থেকে গ্রামের মাঠে প্রশিক্ষক মৃণাল মালের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ভালো খেলার সুবাদে জেলা এবং রাজ্য স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। তারপরেই সর্বশিক্ষা মিশন এই ইউনিফাইড ফুটবল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য পাপিয়ার ট্রায়াল নেয়। সেখান থেকেই যোগ্যতা অর্জন করে জাতীয় দলে স্থান পাওয়া।

পাপিয়া মুর্মুর বাবা শিবলাল মুর্মু একজন সাধারণ চাষী এবং ছোট্ট একটি মুদিখানার দোকান চালান। মা গৃহবধূ। এমন পরিবার থেকে উঠে আসা এই আদিবাসী তনয়া প্রতিদিন ভোর পাঁচটা থেকে ফুটবল মাঠে চলে যান প্র্যাকটিসের জন্য। সেই প্র্যাকটিস সকাল সাতটায় শেষ করে পড়াশোনা, কলেজ সব সমানতালে চালান। এমন কঠোর পরিশ্রমী পাপিয়ার এমন যোগ্যতা অর্জনে গর্ব বোধ করছেন জেলার বাসিন্দারা।