রাশিয়ার মাটিতে সোনা জিতে দেশের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখলো বীরভূমের পারমিতা

অমরনাথ দত্ত : এবছরের ১৩ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে একটি আন্তর্জাতিক আসিফা মার্শাল আর্টস ফেষ্টিভেল আয়োজিত হয়। সেই আন্তর্জাতিক জিত কুনে ডু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বীরভূম থেকে সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে পাড়ি দেয় পারমিতা। তবে এই স্বপ্নের উড়ানের পথটা এতটা সহজ ছিল না পারমিতার জন্য। তা সত্ত্বেও সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে সে আজ জয় করেছে সোনা, গর্বিত করেছে জেলার পাশাপাশি রাজ্য এবং দেশকে, পারমিতা দৌলতে রাশিয়ার মাটিতে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হলো ভারতের নাম।

পারমিতা ভট্টাচার্য বীরভুমের বোলপুরের নিকটবর্তী গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পারমিতার পড়াশোনা বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। দ্বাদশ শ্রেণীর এই ছাত্রী ছোট থেকেই ক্যারেটের প্রতি ঝোঁক নিয়ে রাজ্যস্তরের ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় প্রথমে রুপো এবং পরে জাতীয় স্তরে সোনা পেয়ে সকলের মন জয় কেড়ে নেয়। তারপরেই তার লক্ষ্য ছুটে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। অবশেষে সেই সাফল্য হাতের মুঠোয়।

পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা সত্ত্বেও সে আজ রাজ্য, দেশ পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত। শুধু নিজে প্রতিষ্ঠিত নয়, স্বর্নাক্ষরে লিখে এলেন দেশের নাম, রাজ্যের নাম, জেলার নাম।

রাশিয়ার মস্কোতে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় ভারত থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন মাত্র দু’জন প্রতিযোগী। যাদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র পারমিতা ভট্টাচার্য্য। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে পারমিতা প্রতিযোগিতার অন্তিম পর্যায়ে ব্রাজিলের এক প্রতিযোগীর মুখোমুখি হন। তারপর ব্রাজিলের ওই প্রতিযোগীকে হারিয়ে তিনি স্বর্ণপদক জয় করে নেন। আর এই খবর পারমিতা গ্রাম গোয়ালপাড়াতে পৌঁছাতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা। স্বর্ণপদক জয় করে আগামী ২১ তারিখ সে বীরভূমে পা রাখবে বলে জানা গিয়েছে।

পারমিতার প্রশিক্ষক কৌশব সান্যাল জানান, “খেলাধুলার প্রতি অদম্য ইচ্ছা এবং নিয়মিত অনুশীলনের জেড়েই সে আজ আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, স্বর্ণপদক হাতের মুঠোয় আনতে পেরেছে।”

স্বর্ণপদক জয়ী পারমিতা ভট্টাচার্য তার এই কৃতিত্বের জন্য প্রশিক্ষক এবং বাবা-মায়ের অবদানকে তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “গুরুজি কৌশব সান্যাল, বাবা-মা সব সময় আমার পাশে থাকার জন্যই আজ এমন সফলতা। পারিবারিক আর্থিক অসচ্ছলতা সত্বেও আজ এই জয়, আগামী দিনে আরও সাহায্য পেলে আরও এগিয়ে যাবো।”