চলে গেলেন সৌমেন মিত্র, শেষ যাত্রার সূচি জানালো কংগ্রেস

নিজস্ব প্রতিবেদন : দিন কয়েক ধরেই হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বুধবার মধ্যরাতে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন মিত্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতার শেষ যাত্রায় বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তেমন কোন বড় জমায়েত করা হবে না। তবে বর্ষিয়ান এই কংগ্রেস নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে বেশ কয়েকটি জায়গায় তাঁর মরদেহ রাখা হবে।

প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল ৯ টা নাগাদ বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতার মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে আসা হবে। তারপর নিয়ে যাওয়া হবে ৩ নম্বর লোয়ার রডন স্ট্রিটের বাড়িতে। এরপর মরদেহ নিয়ে আসা হবে প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তর বিধান ভবনে। বিধান ভবনে ঘন্টা দুয়েক বর্ষীয়ান এই নেতার মরদেহ রাখা হবে এবং দলীয় কর্মী নেতারা বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। এরপর সোমেন মিত্রের মরদেহ চলে যাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। বিধানসভায় বেশ কিছুক্ষণ সৌমেন মিত্রকে শায়িত করে রাখার পর দেহ চলে যাবে তাঁর পৈত্রিক ভিটে আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে। সেখান থেকেই সোজা নিমতলা শ্মশানে।

সৌমেন মিত্রের পুরো নাম সৌমেন্দ্র নাথ মিত্র। তিনি ১৯৩১ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত শিয়ালদা বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন। ২০০৯ সালে ডায়মন্ডহারবার থেকে সাংসদ হন। তবে তিনি ২০০৮ সালে জাতীয় কংগ্রেস ত্যাগ করে ‘প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস’ নামে একটি নতুন দল তৈরি করেন। এরপর এই দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে সংযুক্ত হয়। তবে এরপর ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি পুনরায় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। পুনরায় জাতীয় কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার সময় তিনি তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন। এরপর ২০১৮ সালের ২২ শে সেপ্টেম্বর তিনি আবার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন।

সৌমেন মিত্র দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিতভাবে চিকিৎসা করাতে দিল্লির এইমস হাসপাতালে। তবে গত ২১ শে জুলাই তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপরেই চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয় দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে তাঁকে আইসিইউতে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি জ্বর এবং সর্দি থাকায় তার করোনা পরীক্ষাও করা হয়। যদিও সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর দিন কয়েক ধরেই শোনা যাচ্ছিল তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। যদিও সেই অবনতির খবরকে তাঁর ছেলে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দেন। এরপর বুধবার গভীর রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সৌমেন মিত্র।