আসেনি অ্যাম্বুল‍্যান্স, অন্তঃসত্ত্বাকে ঝুড়িতে বসিয়ে নদী পার করলো পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদন : অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর দেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। আর এই বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় নদী নালা, খাল বিল সব জলে পরিপূর্ণ। ইতিমধ্যেই আসাম ও বিহার বন্যায় জর্জরিত। একই অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গেও। একনাগাড়ে বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকার বেশিরভাগ নদীর জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অংশে ভাসা ব্রিজ অথবা নদীর উপর দিয়ে যাতায়াতের মাধ্যম ভেঙে পড়ার খবরও শোনা গিয়েছে। আর এমত অবস্থায় সমস্যায় দেশের বেশিরভাগ অংশের গ্রাম্য এলাকার বাসিন্দারা।

ঠিক এমনই এক অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে। যে ভিডিওতে দেখা গিয়েছে এক অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসতে না পারায় পরিবারের সদস্যরাই একটি ঝুড়িতে বসে নদী পার করছেন। ঝুড়িতে বসিয়ে নদী পার করার জন্য ওই অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের সদস্যরা ঝুড়ির চারদিকে দড়ি বেঁধে বাঁশ লাগিয়ে কাঁধে করে নদী পার করছেন। নদীতে জলের পরিমাণ বেশি থাকলেও বাধ্য হয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য এমন পন্থা অবলম্বন করতে হয়েছে ওই মানুষগুলোকে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের সুরগুজা এলাকার কাদনাই গ্রামে। তবে এই ঘটনা এই প্রথম নয়, দিন কয়েক আগেই এমন ঘটনা চোখে পড়েছিল ছত্তিশগড়েরই বিজাপুর জেলায়। যেখানেও দেখা গিয়েছিল অন্য একটি অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে রান্নার কড়াইয়ে বসিয়ে নদীপথে ১৫ কিলোমিটার পথ পার করে হাসপাতালে পৌঁছাচ্ছেন। এক্ষেত্রেও রান্নার বড় পাত্রে বাঁশ লাগিয়ে নদী পার করে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে পৌঁছানো হয়েছিল। তবে বিজাপুরের এই ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

তবে এই ঘটনা শুধু ছত্রিশগড়েই ঘটে এমনটা নয়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকাতেও এমন ঘটনা ঘটে থাকে। তবে সেগুলি কখনো কখনো সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে, আবার কখনো বা না। বিশেষ করে এমন সমস্যায় জর্জরিত বীরভূমের লাভপুর এলাকার ঠিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়চন্দ্রপুর সহ তিনটি এলাকার বাসিন্দারা। এই সকল এলাকাগুলির চতুর্দিক বছরের বেশির ভাগ সময় জলে ডুবে থাকে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য, রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য রান্নার বড় বড় কড়াই ব্যবহার করা হয়। গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি উঁচু রাস্তা অথবা সেতুর, তবে তা এখনো পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি।