হাতেগোনা প্যাসেঞ্জার নিয়ে চালু হলো বেসরকারি বাস, ক্ষোভ উগরে দিলেন চালকরা

হিমাদ্রি মণ্ডল : বীরভূম জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে গতকাল বীরভূম জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার থেকে বীরভূমের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে ১০টি রুটে বাস চলাচল শুরু হবে। বাস চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে আটটায়। তবে দীর্ঘ দুই মাস পর এই বাস চলাচল পুনরায় শুরু হওয়ায় কিছুটা হলেও বিলম্বিত হয়।

বিলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীর সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা। আর এই পরিমাণ যাত্রীসংখ্যা নিয়ে আগামী দিনে বাস চলাচল করানো কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন গণপরিবহন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত বেসরকারি কিছু বাসের চালক ও মালিকপক্ষ। এছাড়াও এদিন সকালে বাস চলাচল শুরু হওয়ার আগে বর্তমান করোনা আবহে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন বাস শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। যদিও পরে তা সামাল দেন জেলা প্রশাসন ও বেসরকারি বাস মালিক পক্ষ।

বাসচালকদের পক্ষ থেকে শেখ আনার ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “আমরা শ্রমিকরা বাস চালাতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা তো দিতে হবে। মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার কোন কিছুর ব্যবস্থা নেই। অথচ সরকার বলেছে সবকিছু দিতে হবে, কিন্তু কোন কিছুই দেওয়া হয়নি। আর এগুলি না পেয়ে কোনো শ্রমিক যদি বাস চালাতে চাই সেটা নিজের ইচ্ছাতে চালাতে পারবে। কিন্তু আমাদের যদি কারোর করোনা পজিটিভ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে কি হবে? আমাদের বাড়িতেও ছেলেমেয়ে আছে।”

এছাড়াও শ্রমিকপক্ষের তরফ থেকে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “গত দুমাস ধরে বাস চলাচল না করায় আমাদের কোনরকম আয় ছিল না। কিন্তু এই দুই মাসে কোন রকম ভাবে সাহায্য করেনি কেউ। সুতরাং আমরা যখন দুই মাস না খেয়ে থাকতে পেরেছি তখন আরও দুমাস না খেয়ে থাকতে পারবো। আমি যে গাড়িতেই যাবো আমাকে নিরাপত্তা দিতে হবে অবশ্যই।”

যদিও শ্রমিকদের এই ক্ষোভ উগরে দেওয়ার বিষয় নিয়ে মালিকপক্ষ আগামীকাল তাদের সাথে বসে আলোচনা করার কথা জানান।এরপরেই বেশকিছু বাস এদিন সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটে পাড়ি দেয়। তবে ১০ টি বাস চলার কথা থাকলেও সব বাসের দেখা মেলেনি এদিন সকালে। এছাড়াও যাত্রীসংখ্যা ছিল হাতেগোনা কয়েকজন। যা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে আগামী দিনে এই বর্তমান করোনা আবহে কিভাবে চলবে বাস পরিষেবা।

মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয়, “যেটা আমাদের সকাল সাড়ে আটটায় শুরু করার কথা ছিল কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। তবে কিছুটা পরে হলেও সক্ষম হয়েছি। আমরা বিভিন্ন রুটে গাড়ি পাঠিয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে যে কোন প্যাসেঞ্জার নেই। তাই এইভাবে গাড়ি চালানো যাবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না।”

তবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার না পাওয়ার যে অভিযোগ শ্রমিকপক্ষ তুলেছিলেন সেই অভিযোগ খণ্ডন করে মালিকপক্ষ জানান, “সরকারি নির্দেশিকা মেনে আমরা প্রত্যেক শ্রমিককে মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছি।”