রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীতে পুলিশের উদ্যোগে ট্যাবলো, শঙ্খ বাজিয়ে ফুল বর্ষণ ব্যালকনি থেকে

লাল্টু, অমরনাথ দত্ত ও হিমাদ্রি মণ্ডল : মন খারাপ বীরভূমের, মন খারাপ বঙ্গবাসীদের, মন খারাপ বিশ্বের। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯ তম জন্ম জয়ন্তীতে যেখানে সকলে শ্রদ্ধার সাথে আনন্দ ভরে প্রতিবছর এই দিনটি পালন করে থাকেন সেখানে এবছর করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সব বানচাল। তবে এই মন খারাপ থেকে উদ্ধার করতে বীরভূম পুলিশের তরফ থেকে আয়োজন করা হয় নানান অনুষ্ঠানের। কোথাও পুলিশ কর্মীরাই গাইলেন রবীন্দ্র সঙ্গীত, কোথাও আবার তাদের উদ্যোগেই বের হল ট্যাবলো, আর সেই ট্যাবলো দেখে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকারা শঙ্খ বাজিয়ে ফুল বর্ষণ করলেন রবীন্দ্র প্রতিকৃতিতে। ঠিক একইভাবে ফুল বর্ষণ হলো বাড়ির ব্যালকনি থেকে। শান্তিনিকেতনে ও দিনটি পালিত হলো রীতি মেনে অনুষ্ঠান ছাড়াই।

দুবরাজপুরে বীরভূম পুলিশের উদ্যোগে দুবরাজপুর থানার পুলিশ শুক্রবার সকালে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে একটি সুসজ্জিত ট্যাবলো করে। সঙ্গে ছিল মাইকে রবীন্দ্র সঙ্গীত। নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই শোভাযাত্রায় পা মেলান ডিএসপি হেডকোয়ার্টার কাশীনাথ মিস্ত্রি, দুবরাজপুরের সিআই আস্তিক মুখার্জি ও পুলিশ ইন্সপেক্টর মাধব চন্দ্র মন্ডল, পাশাপাশি হাতেগোনা কয়েকজন অফিসার। আর এই শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করার সময় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরা পুলিশকে তাদের কাজকর্মের জন্য চন্দনের ফোঁটা দিলেন, রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে দেওয়া হয় ফুল। যারা ছাদের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা সেখান থেকেই ওই ট্যাবলোতে থাকা রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে ফুল বর্ষণ করে শ্রদ্ধা জানান।

করোনা আর লকডাউন এই দুইয়ের যাঁতাকলে যখন সিউড়ির বাসিন্দারা গৃহবন্দী, ঠিক সেসময়ই বীরভূম পুলিশের উদ্যোগে সিউড়ি থানার পুলিশ সিউড়ির মসজিদ মোড়ে হারমোনিয়াম হাতে রবীন্দ্র সঙ্গীত গান গেয়ে রবি ঠাকুরের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন। উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি ডিএনটি অভিষেক মন্ডল সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। গান গাইলেন স্বয়ং সিউড়ি থানার আইসি চন্দ্রশেখর দাস, আর সাথে ডুগি তবলা হাতে অন্যান্য পুলিশকর্মীরা তালে তাল মেলালেন।

শান্তিনিকেতনে রীতি মেনে পালন করা হলো রবীন্দ্রজয়ন্তী। তবে অন্যান্য বছর যেমন নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে তা এবছর করোনা কোপে সব বাতিল। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, রাষ্ট্রপতির কোট মেম্বার ডাক্তার সুশোভন ব্যানার্জি ও অন্যান্যরা দিনটিকে শ্রদ্ধার সাথে পালন করেন। তবে এখানে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে করোনা প্রকোপের কিছু নিয়মে গরমিল করতে দেখা যায়।

তবে সে যাই হোক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তীতে মনমরা অবস্থাতে কাটাতে হচ্ছে বিশ্বের পাশাপাশি জেলার বাসিন্দাদেরও। আর এই মনমরা থেকে সকলকে উদ্ধার করতে পুলিশ ও অন্যান্যদের উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলে দাবি করেছেন বিশিষ্টজনেরা।