৫০০০ টাকা থেকে ৪২০০০ কোটি, কিভাবে ধনকুবের হয়ে ওঠেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের স্টক মার্কেটের অঘোষিত রাজা যাকে বলা হয়ে থাকে তিনি হলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। এই রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার এয়ারলাইন্স সংস্থা আকাশা এয়ারলাইন্স সম্প্রতি পথ চলা শুরু করেছে। তবে স্টক মার্কেটের এই রাজা রবিবার ভোর ৬:৪৫ নাগাদ ৬২ বছর বয়সে প্রয়াত হন। এদিন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে আনা হয়। তবে সেখানে তাকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মনে করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। যদিও মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট এখনো জানা যায়নি।

স্টক মার্কেটের অঘোষিত এই রাজা রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা ১৯৮৫ সালে হাতে মাত্র ৫০০০ টাকা নিয়ে স্টক মার্কেটে পা রেখেছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিজেই তৈরি করেছিলেন নিজের অগ্রগতির রাস্তা। একাধিক শিল্প এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তিনি বিনিয়োগ করেছিলেন। সম্প্রতি ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার মোট সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে কোটি কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এই টাকার পরিমাণ ৪২০০০ কোটি টাকা।

শেয়ার বাজারে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা অঘোষিত রাজা হিসেবে পরিচিত লাভ করার পাশাপাশি তাকে বলা হত বিগ বুল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো তিনি যে শেয়ারে হাত দিতেন সেই শেয়ারে সোনা ফলত। সম্প্রতি তিনি একটি সংস্থার শেয়ার কিনেছিলেন এবং সেই সংস্থার শেয়ারে তিনি হাত দেওয়ার পরেই দেখা যায় সেই শেয়ার তরতড়িয়ে বাড়তে শুরু করে। মাত্র একদিনেই তিনি ২০০ কোটি টাকার বেশি লাভ করেছিলেন।

বিভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগ করা ছাড়াও তিনি ছিলেন অ্যাপটেক লিমিটেড ও হাঙ্গামা ডিজিটাল মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান। এছাড়াও ছিলেন একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর। তবে এই রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা কোন রাজার ঘরে জন্মগ্রহণ করেননি। ১৯৬০ সালের ৫ জুলাই একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তবে তার স্বপ্ন ছিল বড় ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।

সেই স্বপ্ন পূরণ করার জন্যই তিনি কলেজে পড়াকালীনই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন। তার দালাল স্ট্রিটে পা রাখার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন তার বাবা। এক সাক্ষাৎকারে তার মুখ থেকে এমনটাই জানা গিয়েছিল। ১৯৮৫ সালে শেয়ার মার্কেটে পা রাখার পর প্রথম তিনি লাভের মুখ দেখেন ১৯৮৬ সালে। সেই সময় তিনি টাটা-টির পাঁচ হাজার শেয়ার কিনেছিলেন মাত্র ৪৩ টাকায়। তিন মাসের মধ্যে সেই শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছিল ১৪৩ টাকা। এরপরই তিনি তিন চার বছরের মধ্যে শেয়ার মার্কেট থেকে লাভ করেন ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। এই ভাবেই এই শেয়ার মার্কেটের হাত ধরেই কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা।