দল ছাড়লেন রামপুরহাটের তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর

নিজস্ব প্রতিবেদন : রামপুরহাট পুরসভার প্রশাসক অশ্বিনী তেওয়ারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দল ছাড়ার ঘোষণা করলেন রামপুরহাটের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর আব্বাস হোসেন। তিনি এই এলাকার ১০ বছরের কাউন্সিলর ছিলেন। মঙ্গলবার তার দল ছাড়ার বিষয়ে ঘোষণার আগে তিনি দলের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং কৃষিমন্ত্রী আশিস ব্যানার্জিকে বারংবার অশ্বিনী তেওয়ারির বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

প্রাক্তন এই তৃণমূল কাউন্সিলর তথা কো-অর্ডিনেটর আব্বাস হোসেনের মূল অভিযোগ রামপুরহাট পৌরসভার প্রশাসক অশ্বিনী তেওয়ারির বিরুদ্ধে। তিনি জানিয়েছেন, “উনি দিনের পর দিন দুর্নীতি করে যাচ্ছেন তবুও যা বলছেন দল তাই করছে। বিভিন্ন কাজ কর্মের মাধ্যমে দলের অন্যান্য কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছেন। অন্যান্য কাউন্সিলররা তা দেখেও সহ্য করে বসে আছেন। কারণ তাদের স্ত্রী অথবা কেউ চাকরি করেন। মুখ খুললে যদি তাদের বদলি করে দেওয়া হয়, এই ভয়ে মুখ খুলছেন না। কিন্তু আমি কোনদিনই দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করিনি, আর করবোও না। যে জন্য আমার মুখ কেউ আটকে রাখতে পারবে না।”

পাশাপাশি আব্বাস হোসেন এদিন দাবি করেছেন, “তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল দল করে আসছি। যে কারণে দল ছাড়ার জন্য অন্তরে ব্যথা হচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু করার নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার লড়াই জারি থাকবে। রামপুরহাটে আমার পায়ের তলায় মাটি আছে। যে কোন সময় আমার এলাকা থেকে ভোটে জয় ছিনিয়ে আনতে পারি। পরপর দুটি নির্বাচনে রামপুরহাটের প্রতিটি এলাকায় তৃণমূল পিছিয়ে থাকলেও আমার এলাকায় তৃণমূল এগিয়ে আছে।”

অন্যদিকে দল ছাড়ার আগে তিনি এদিন রামপুরহাটের প্রশাসক অশ্বিনী তেওয়ারির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “অশ্বিনী তেওয়ারি আজ দলে আছে, কাল নাও থাকতে পারেন। কিন্তু তবুও তৃণমূলের উর্ধ্বতন নেতারা তার কথাতেই চলছেন। আর যারা তৃণমূলের একনিষ্ঠ সেবক তাদের অবহেলা করা হচ্ছে।” তবে তিনি এদিন দল ছাড়ার ঘোষণা করলেও অন্য কোন দলে যোগ দিবেন কিনা তা স্পষ্ট করেননি। তার কথায়, ‘যা করবো আপনারা সকলেই জানতে পারবেন।’

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং আব্বাস হোসেনের দল ছাড়ার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত রামপুরহাটের প্রশাসক অশ্বিনী তেওয়ারির জানিয়েছেন, “আমি এই ঘটনার কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই সিদ্ধান্ত হবে। আমি কিছু বলবো না। তবে আব্বাস হোসেনের সাথে আমার কোনো বিরোধ ছিল না।”

প্রসঙ্গত, রামপুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর পদে আব্বাস হোসেন এবং চেয়ারম্যানের পদে অশ্বিনী তেওয়ারি থাকাকালীন এর আগেও বেশ কয়েকবার বিবাদ লক্ষ্য করা গেছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সেই বিবাদেরই অন্তিম ফলাফল আব্বাস হোসেনের দল ছাড়া। এখন দেখার বিষয় আগামীদিনে আব্বাস হোসেনের মানভঞ্জনের জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়!