নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ লকডাউন পর্বে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে বহু বাণিজ্যিক সংস্থা। সংস্থা বাঁচাতে দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে চলছে নির্বিচারে কর্মী সংকোচন। একদিকে করোনা অন্যদিকে ছাঁটাইয়ের কবলে জীবন-জীবিকায় বিপুল অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর এক অংশ।
বৃহৎ বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধি হয়েও কর্মী ছাঁটাই নিয়ে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করলেন রতন টাটা। প্রশ্ন তুললেন প্রতিটি সংস্থার কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে। বাণিজ্যিক সংস্থা মানেই শুধু লাভ লোকসান নয়। সেই সংস্থারও আছে কর্মীদের প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতা।
রতন টাটার মতে, কর্মী ছাঁটাই কোন সংস্থার সমাধানের একমাত্র পথ হতে পারে না। প্রতিটি সংস্থার উচিত কর্মীদের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া।
মাত্র কয়েক মাসে বৃহৎ সংস্থাগুলির হাল এতোটা খারাপ হতে পারে না যে গণহারে কর্মী ছাঁটাই করতে হবে। এর পিছনে আছে সংস্থা পরিচালনায় অদক্ষতা, দুর্ণীতি ও দায়বদ্ধতাহীন মুনাফা লাভের মনোভাব।
বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন রতন টাটা। করোনা পরিস্থিতির সুযোগে যখন বহু সংস্থা ব্যাপকহারে কর্মী ছাঁটাই করছে। তখন রতন টাটার গোষ্ঠী কোন সংস্থা থেকে এখনও পর্যন্ত কোন কর্মী ছাঁটাই হয়নি। উচ্চ পদস্থ কিছু কর্মী ২০ শতাংশ বেতন কমানো হয়েছে। কিন্তু কাউকে ইস্তাফা দিতে বাধ্য করা হয়নি। অথচ এই গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থা লোকসানে চলছে। লোকসানের মুখে পড়ে যারা কর্মী ছাঁটাই করছে তাঁরা অসংবেদনশীলতার পরিচয় দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জানান, “ভারতের বেশকিছু কর্পোরেট সংস্থা যেভাবে কর্মী ছাঁটাই করছে তা খুবই হটকারী পদক্ষেপ। এর থেকে বোঝা যায় এইসব সংস্থার নেতৃত্ব স্থানে যারা আছেন তাদের মধ্যে কোন সহানুভূতি নেই।”
সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, “কোন প্রতিষ্ঠান তাঁর কর্মীদের প্রতি সংবেদনশীল না হলে টিকে থাকতে পারে না। মানছি যে করোনা সংকটে সকলে আক্রান্ত। কিন্তু তা সত্বে সকলে মিলে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পথ বার করতে হবে। যেমন ওয়ার্ক ফ্রম একটা সমাধানের পথ। কিন্তু কর্মী ছাঁটাই নয়। ভুলে গেলে চলবে না সবচেয়ে কঠিন সময়েই নতুন পথ বেরোয়।”
রতন টাটার এই বক্তব্য দেশজুড়ে নেটিজেনদের প্রশংসা অর্জন করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে দায়বদ্ধতাহীন পুঁজিবাদ ব্যবস্থার।