EMI নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা সুপ্রিম কোর্টে জানালো RBI

নিজস্ব প্রতিবেদন : অর্থনীতির হাল ফেরাতে ঋণের কিস্তিতে সময়সীমা বাড়ানোর স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে এবার কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফ নামায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিয়েছে গত ছয় মাস ঋণের কিস্তি স্থগিতের যে সুযোগ ঋণ গ্ৰহিতারা পেয়ে আসছিলেন তা আর বাড়ানো সম্ভব নয়।

দেশজুড়ে করোনা মহামারীর কারণে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে দু’দফায় মোট ছয় মাসের জন্য ঋণের কিস্তির উপর স্থগিতাদেশ দেয় কেন্দ্র। এছাড়াও বিশেষ সুযোগ হিসাবে, ঋণের সুদের উপরে যে সুদ দিতে হতো তা ঋণ গ্ৰহীতাদের দিতে হবে না বলে ৩রা অক্টোবর ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। যদিও এই নিয়ম প্রযোজ্য ছিল ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে।

কেন্দ্রের বক্তব্য, আত্মনির্ভর ভারত ও গরিব কল্যাণ যোজনায় বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থা নিয়েছে এই সরকার। সেই সঙ্গে ঋণ স্থগিতাদেশে সুদের উপর সুদে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সহ দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা লাগবে। কেন্দ্রের আর্জি, সুদের ছাড় নিয়ে কোন নির্দিষ্ট শিল্পের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্ট যাতে আলাদা কোন আবেদন না শোনে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে এভাবে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ালে একদিকে যেমন ঋণ শোধে শিথিলতা দেখা দেবে তেমন ধাক্কা খাবে ঋণ দানের প্রক্রিয়া। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বকেয়া ঋণকে অনুৎপাদক সম্পদ হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে না বলে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাও তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

ঋণ পুনর্গঠনের সমাধানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিযুক্ত কে ভি কামাথ কমিটি ২৬টি শিল্পকে ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করে। কেন্দ্র আট ধরনের ঋণের স্থগিতাদেশে সুদের উপরে সুদে সুবিধা দেওয়ার কথা জানায়। যদিও কেন্দ্রের হলফনামার জবাবে সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে কামাথ কমিটির রিপোর্ট ও স্থগিতাদেশ নিয়ে জারি হওয়া সমস্ত রকম বিজ্ঞপ্তি পেশ করার নির্দেশ দেয়।

কেন্দ্রের মূল বক্তব্য, করোনা মহামারীর কারণে যে যে সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিয়েছে তার বাইরে ঋণ গ্ৰহীতাদের আর কোন সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়।
যদি দেওয়া হয় তাহলে দেশের ব্যাঙ্কিং ও সমগ্ৰ অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর চাপ পড়বে। স্থগিতাদেশ চালিয়ে গেলে ঋণগ্ৰহিতার লাভের পরিমাণ কম। এছাড়াও রাজকোষে যেভাবে টান পড়েছে তাতে এই ঋণে স্থগিতাদেশ দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

কেন্দ্র জানিয়েছে, কামাথ কমিটির সিদ্ধান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গ্ৰহণ করেছে। ঋণ সমস্যার সমাধানে শুধু মাত্র স্থগিতাদেশ নয়, নানারকম অর্থনৈতিক পন্থা অবলম্বন করতে হবে বলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মত।

করোনা মহামারী দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। প্রাথমিক ভাবে সেই সমস্যা সমাধানে কেন্দ্র ঋণক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিলেও বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা ও দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরও গতিশীল করতেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের এই নতুন হলফনামা বলে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।