নেশা ছেড়ে নেশামুক্তি কেন্দ্র গড়ে চমক রাহুলের

লাল্টু : একদিন নিজেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তারপর সেই নেশা থেকে মুক্তি পেতে গিয়েছিলেন নেশামুক্তি কেন্দ্রে। সফলতাও মিলেছে হাতেনাতে, পাশাপাশি অভিজ্ঞতা। আর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেই গড়ে তুললেন নেশামুক্তি কেন্দ্র।

দিনের পর দিন যুবসমাজ খেলাধুলো বা বন্ধু বান্ধবের সাথে মেলামেশার পরিবর্তে নেশার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। যার ফলে সমাজের মূল চাবিকাঠি হয়ে পড়ছে নেশাগ্রস্ত। অনেকের আবার ধারণা নেশাগ্রস্ত যুবক আর সমাজের মূল পথে ফিরতে পারবে না। কিন্তু সে ধারণা যে ভুল তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই রাহুল। আসলে নেশা হলো রোগ, যেমন প্রতিটি রোগীর উপযুক্ত চিকিৎসার শরীরকে রোগ মুক্ত করে, ঠিক এক্ষেত্রেও তেমনটাই। আর এই সমাজকে পুনরায় নির্মল করে তোলার জন্য প্রয়োজন নেশামুক্ত সুস্থ সমাজের।

বীরভূমের দুবরাজপুর শহরে ১০০ জনের থাকার ব্যবস্থা সহ এমন একটি নেশামুক্তি কেন্দ্র গড়ে তুললেন রাহুল গড়াই সহ বেশ কয়েকজন যুবক। যেখানে স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে নেশা থেকে মুক্তি পাওয়ার চিকিৎসার নিয়মিত ব্যবস্থা রয়েছে। আর তাদের এই সংস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘পরিবর্তন ফাউন্ডেশন’, ‘পরিবর্তন ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমেই পরিচালিত হবে পরিবর্তন নেশামুক্তি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন এলাকার প্রাক্তন পৌরপতি পীযূষ পান্ডে। উদ্বোধন করার সাথে সাথে তিনি জানান, “রাহুল একদিন নিজেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তারপর সেখান থেকে চিকিৎসার মাধ্যমে নেশা মুক্ত হয়ে সমাজের অন্যান্যদের নেশা মুক্ত করার উদ্দেশ্যে এমন পরিকল্পনা নিয়েছে যা খুবই প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগের ফলে আমাদের শহর দুবরাজপুর ছাড়াও আশেপাশের গ্রামগুলিও উপকৃত হবে।”

নেশামুক্তি কেন্দ্রের মূল উদ্যোক্তা রাহুল জানাই, “একটা সময় ছিল যখন আমি নেশায় আসক্ত ছিলাম তখন সকালে বেলায় ঘুম থেকে উঠে শুধু একটাই চিন্তা থাকতো কিভাবে নেশা করবো। কিন্তু সেই সময়টা ছিল না সঠিক সময়। অবশেষে চিকিৎসা এবং নিজেও চিকিৎসার কাজে হাত দেওয়ার পর বুঝতে পারি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কি। তারপর আমাদের বেশ কয়েকজন বন্ধু বান্ধব এবং এলাকার দাদাদের সহযোগিতায় আজ এই নেশামুক্তি কেন্দ্র গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি।”

জীবন যুদ্ধে সারাবিশ্বে নানান মানুষ নানান লড়াইয়ের কথা আমরা শুনেছি বা জেনে থাকি। তবে নিজে নেশামুক্ত হয়ে, নেশামুক্তির পথকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়ে অন্যদেরকে নেশামুক্ত করে তোলার উদ্যোগ রাহুলের মধ্যে দেখা গিয়েছে তা সমাজে চমক।