প্রশান্ত কিশোরের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ফাটল! শুরু জল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদন : সদ্য সমাপ্ত হওয়া লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূল ছাত্র শিবিরের কাছে হারায় একগুচ্ছ আসন। যার পরেই পদ্ম শিবির উঠে পড়ে লাগে বাংলা দখলে। এদিকে পদ্ম শিবিরকে আটকাতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি রাজনৈতিক স্ট্রাটেজিকার হিসাবে নিয়োগ করেন প্রশান্ত কিশোরকে। সূত্রের খবর, তৃণমূলের হয়ে প্রশান্ত কিশোরকে কাজ করানোর জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে তৃণমূলের।

কিন্তু এসবের পরেও হঠাৎ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক রাজ্য নিয়ে রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সাম্প্রতিককালে বেশকিছু ঘটনা নিয়ে প্রশান্ত কিশোর তার ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করছেন। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্কের তিক্ততার কারণ।

ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রশান্ত কিশোরের টিম নাকি মধ্যরাতেও এলাকার বিধায়কদের ফোন করে এলাকায় সংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। আর এইভাবে মধ্যরাতে, ভোররাতে ফোন করে নির্দেশ দেওয়া নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা।

সর্বভারতীয় ওই সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ হয় খবর অনুযায়ী আরো জানা যায়, নবান্নের ১৪ তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সাথে রীতিমতো প্রতিদিন যোগাযোগ রাখেন। কিন্তু ইদানীংকালে, মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোরের কথা আর শুনছেন না। প্রশান্ত কিশোর যেসকল বুদ্ধি দিয়েছেন সেগুলো গ্রহণ করছেন না মুখ্যমন্ত্রী। প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধি এরাজ্যে সবক্ষেত্রে সফল না হওয়ায় প্রশান্ত কিশোরকে অপেক্ষা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

ওয়াকিবহাল মহলের অনেকের মন্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধির বাস্তব প্রয়োগ যে হবে না তা হয়ত এতদিনে উপলব্ধি করতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। আবার অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে এত কোটি টাকা দুর্নীতির কথা প্রশান্ত কিশোর আগে জানলে হয়তো উপদেষ্টা হিসাবে তৃণমূলের হয়ে কাজে নিয়োগ হতেন না।

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এই কর্মসূচিতে প্রশান্ত কিশোরের টিমের ৮ জন কর্মী কাজ করছেন। অভিযোগ এই কর্মসূচি সরকারি জায়গা ছেড়ে বেসরকারি জায়গা থেকে করার নির্দেশ ছিল প্রশান্ত কিশোরের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করে সরকারি বহু ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। যেমন খাদি ভবন থেকে এই কর্মসূচি চলা। এমনকি এই খাদি ভবনের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার জন্য দুজন IAS অফিসারকে বদলিও করা হয়েছে। এছাড়াও ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে যোগ করা হয়েছে সরকার পোষিত ওয়েবেল নামে একটি সংস্থাকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর প্রশান্ত কিশোরের ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়ে এও জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন নাগরিক পঞ্জিকরণের বিরুদ্ধে সভার জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর হাঁটার জন্য রাস্তার দু’ধারে ব্যারিকেড তৈরি করার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন খরচ করেছে ১৫ লক্ষ টাকা। আর এই খরচের কথা প্রশান্ত কিশোরের কানে যাওয়া মাত্রই বেজায় চটে যান তিনি। শোনা যাচ্ছে সেখানে থেকেই নাকি সম্পর্কে চিড় ধরে।

এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন, এরাজ্যে সাড়ে ৬ লক্ষ সরকারি চাকরি প্রসঙ্গিত নানান প্রশ্ন প্রশান্ত কিশোর নাকি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও অন্যান্য বিধায়ক মন্ত্রীদের করেছিলেন। সর্বভারতীয় ওই সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, এই সকল প্রশ্নেই গোল বেঁধে যায়।