পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় প্রাণ কেড়েছিল হাতি, সামনে এলো সেই অর্জুনের মাধ্যমিক রেজাল্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন : জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে গিয়ে হাতির হানায় প্রাণ গিয়েছিল বছর ষোলোর অর্জুনের (Arjun Das)। বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় আচমকা জঙ্গল থেকে তাড়া করে আসে একটি হাতি। সেই ঘটনায় কোনক্রমে বাবা পালিয়ে বাঁচলেও শুঁড় দিয়ে জঙ্গলে তুলে নিয়ে যায় অর্জুনকে। পরে জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলেও তাকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি।

এই বছর মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের মানতা দাদি অঞ্চলের মহারাজঘাট এলাকায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। সেদিনের সেই ঘটনার পর ভেঙে পড়েন অর্জুনের বাবা বিষ্ণু দাস। আর এবার যখন মাধ্যমিকের ফলাফল সামনে এলো সেই সময় সেই রেজাল্ট দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না তিনি।

জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) টাকিমারির বাসিন্দা অর্জুন ছিলেন পাচিরাম নহাটা স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় ছেলেকে হারিয়ে এতদিন পুত্রশোকে বুকে নিয়ে দিন কাটাতে থাকা বিষ্ণু বাবুর শোক আরও বাড়িয়ে দিল শুক্রবারের মাধ্যমিকের ফলাফল। পর্ষদের তরফ থেকে যেমন রাজ্যের প্রতিটি পরীক্ষার্থীর মার্কশিটের ব্যবস্থা করেছে ঠিক সেই রকমই মার্কশিটের ব্যবস্থা করেছে অর্জুনেরও। আর সেই মার্কশিট এখন অর্জুনের বাবা-মায়ের হাতে আসতেই তারা ছেলেকে ঘরের আনাচে-কানাচে খুঁজছেন।

মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিন অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবারই হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল অর্জুনের। যে কারণে তার একটি পরীক্ষাও দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে প্রকল্প ভিত্তিক যে সকল পরীক্ষা হয়েছিল সেই প্রতিটি পরীক্ষাতেই অর্জুন পেয়েছিল ১০ এ ১০। পর্ষদের তরফ থেকে সেই মার্কশিটই অর্জুনের নামে প্রকাশ করা হয়েছে।

পর্ষদের তরফ থেকে প্রকাশ করা অর্জুনের মার্কশিট অর্জুনের পরিবারের সদস্যদের হাতে আসার পর দেখা গিয়েছে সেখানে সব বিষয়ের পাশেই লেখা ‘Ab’ মার্ক অর্থাৎ অনুপস্থিত। তবে ঠিক তার পাশে থাকা প্রকল্প ভিত্তিক নম্বরে চোখ আটকে যাচ্ছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ইংরেজি, অঙ্ক, বাংলা থেকে বিজ্ঞান প্রতিটি বিভাগেই ১০ এ ১০। আর এই মার্কশিট দেখার পর অর্জুনের বাবা-মায়ের আক্ষেপ ‘হাতিটা ওকে পরীক্ষায় বসার সুযোগটুকুই দিল না! নাহলে ও খুব ভাল ফল করতো’।