আগুনে পুড়ে ছাই মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো টাকা, অসহায় দুর্গাপুরের রিকশাওয়ালা

আজকাল আগুন লাগার ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। সম্প্রতি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেলো দুর্গাপুরে। এই অগ্নিকাণ্ডে মেয়ের বিয়ের গহনা সহ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে এক রিক্সা চালকের।

স্থানী সূত্রে জানা গিয়েছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পরেছেন রিক্সা চালক কিতাব শেখ। অসুস্থতার কারণে তাঁর স্ত্রী সাইদুন বিবি’র প্রায় ১৪ বছর আগে মৃত্যু হয়। তিনি এতই দুঃস্থ যে তার দুটি মেয়েকে মানুষ করতেই তিনি অক্ষম। তাই মায়ের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর দুই কন্যা বীরভূম জেলার লাভপুরের শাউগ্রামে তাঁদের মামার বাড়িতে রেখে আসেন।

তবে সেখানে তাঁদের পড়াশোনার জন্য প্রতিমাসে খরচ পাঠাতেন কিতাববাবু। উদয় অস্ত পরিশ্রম করে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন মাতৃহীন দুই কন্যা সন্তানের জন্য। জানা গেছে ওই রিক্সা চালকের জ্যেষ্ঠ কন্যা উর্মিলা খাতুনের বয়স ১৮ বছর। বর্তমানে তাঁর বিবাহের জন্য বীরভূমের এক পাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছিল।

সব ঠিক থাকলে আগামী ৫ মাসের মধ্যেই তাঁর বড়ো মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতেন কিতাব শেখ। মেয়েদের বিয়ের জন্য কিতাববাবু প্রায় ৪ ভরি সোনার গয়না ও নগদ দেড় লাখ টাকা জমিয়েও ছিলেন। তবে আগুনে প্রায় সব কিছু পুড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিতাববাবুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে পুড়ে যাওয়া ৫০০ টাকার নোট। কিতাববাবু বলেন, ‘অটো -টোটো চালকের দৌরাত্ম্যে বর্তমানে রোজগার কমে গিয়েছে। তবুও বহু কষ্ট করে মেয়ের বিয়ের জন্য সোনার গয়না ও টাকা জমিয়ে ছিলেন। এই অগ্নিকাণ্ডে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেন।

যদিও এই ঘটনার পর কিতাববাবুর পাশে থাকা আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দুর্গাপুর পুরসভার পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপারসন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই দরিদ্র রিক্সা চালকের মেয়ের সামনে বিয়ে। এর মধ্যে তার কষ্ট করে উপার্জন করা দেড় লক্ষ টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। তাই ওই রিক্সা চালকের মেয়ের বিয়েতে যাতে সবাই মিলে সাহায্য করেন তিনি সেই ব্যবস্থাই করবেন।