Srirampur-Bagbazar Bus Route: শ্রীরামপুর-বাগবাজার বাস রুট, কলকাতার যাত্রীদের জন্য লাইফলাইন, প্রায় এক শতাব্দীর পরিষেবার পরে অবশেষে বিদায় নিল। ১৯২০-এর দশকে চালু হওয়া এই রুটটি বাগবাজার এবং শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যগুলির মধ্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা কয়েক হাজার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। বছরের পর বছর ধরে, বাগবাজার বাস রুটটি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং কলকাতার শহুরে ল্যান্ডস্কেপকে মিটমাট করার জন্য বিকশিত হয়েছে।
এই শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটের (Srirampur-Bagbazar Bus Route) বাসগুলি শহরের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসাবে কাজ করেছিল, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস এবং বাজারের সাথে সংযুক্ত করে। এই রুটের ফ্রিকোয়েন্সি এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতা এটিকে অনেকের জন্য একটি পছন্দের বিকল্প করে তুলেছে, বিশেষ করে ছাত্র এবং দৈনিক মজুরি কর্মীদের জন্য যারা সাশ্রয়ী মূল্যে যাতায়াতের জন্য এটির উপর নির্ভর করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাগবাজার বাস রুটের পতনের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ অবদান রেখেছে। রাইড-শেয়ারিং পরিষেবার বিস্তার, অ্যাপ-ভিত্তিক ট্যাক্সি, এমনকি কলকাতা মেট্রো নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি যাত্রীদের দ্রুত এবং আরও সুবিধাজনক বিকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে। ফলে বাগবাজার রুটে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা পরিবহন কর্তৃপক্ষের জন্য পরিচালনার চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে গেছে।
তদুপরি, কলকাতায় ট্র্যাফিকের ধরণ এবং নগর উন্নয়ন প্রকল্পগুলি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট রুটগুলির পুনঃমূল্যায়নকে প্ররোচিত করেছে, নগর পরিকল্পনাবিদরা আরও দক্ষ এবং সুবিন্যস্ত পরিষেবাগুলিতে মনোনিবেশ করেছেন৷ এই বাস রুটটি বন্ধ হওয়া একটি যুগের সমাপ্তি এবং শহরের পরিবহন ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকে নির্দেশ করে৷ যদিও বাগবাজার বাস রুটটি এখন কলকাতার ইতিহাসের একটি অংশ, এটি শহুরে পরিবহনের বিবর্তন সম্পর্কে একটি বিস্তৃত বর্ণনা উপস্থাপন করে।
এই ঘটনার ফলে শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটের (Srirampur-Bagbazar Bus Route) শেষ বাস মালিক সুদীপ গোস্বামী বলেন যে, শ্রীরামপুর থেকে কলকাতার বাগবাজার অনেকটা লম্বা রাস্তা। বেশিরভাগ যাত্রীরাই এই দীর্ঘ-রুটটি পছন্দ করতো না। তার কারণ সময়ের অভাবে সকলেই কম সময়ের ব্যবধানে শর্ট রুট দিয়ে যাওয়া পছন্দ করতো। এছাড়া অটো এবং টোটোর দৌড়াত্ম্যে মানুষ বাসের থেকে এই দুই যানবাহনকে বেশি পছন্দ করছে আজকাল। শ্রীরামপুর থেকে বালি এই পথে জিটি রোড মাঝে মাঝে এতটাই সরু যে এখান থেকে বাসের মতো বড় গাড়ি যাতায়াত করতে খুব অসুবিধায় পড়তে হতো।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের মতে এই সমস্ত সমস্যার জন্য গত প্রায় চার বছরের মধ্যে ৪০টি বাস রুট একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। বাগবাজার বাস রুটটিকেও বাঁচানোর চেষ্টা করলেও দীর্ঘ ৯৮ বছর অবশেষে বন্ধ করতেই হলো। এর ফলে প্রশাসন যথেষ্ট সচেতন হয়েছে। যদিও তারা খুব চেষ্টা করছে অন্যান্য বাস রুটগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার, তবে তাদের এই চেষ্টা কতটা কার্যকর হবে সেই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বাস মালিকদের।