কেমন ছিল ইন্টারনেট সেনসেশন রাণু মন্ডলের অতীত? একনজরে রাণুর বর্ণময় জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদন : রানু মন্ডল, যিনি ভবঘুরে জীবন থেকে বলিউড গায়িকা হয়ে উঠেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া গান থেকে। কিন্তু জানেন তাঁর প্রথম জীবনের কাহিনী। বর্তমান রানুকে নিয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়া মত্ত, সবাই জেনে গেছেন তাঁর ভবঘুরে জীবনের কাহিনী এবং বলিউডে গায়িকা হিসাবে পা রাখার প্রেক্ষাপট। কিন্তু চেনেন ৫৬ বছর আগের রানুকে!

একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায়, ৫৬ বছর আগে রানু মন্ডলের জন্ম হয় বিত্তশালী এক পরিবারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বাবা-মায়ের সাথে বিচ্ছেদ ঘটে তাঁর। পরে বাবুল মন্ডল নামে এক রাঁধুনির সাথে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁর স্বামী বলিউড নায়ক ফিরোজ খানের বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন। সেই সূত্রে দুজনে পাড়ি দেন মুম্বাইয়ে। কিন্তু পরে পারিবারিক স্বামীর মত্যুর পর রানু মন্ডলকে পুনরায় ফিরে আসতে হয় পশ্চিমবঙ্গে, সঙ্গে ছিলেন একমাত্র মেয়ে সাথী। তারপরেই তাঁর জীবন যুদ্ধ শুরু হয়, লড়াইটা কঠোর থেকে কঠোরতম জায়গায় পৌঁছে যায়।

আইএএনএস নামে ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রানু মন্ডল জানান, “তাঁর জীবনের ওঠা পরা নিয়ে তৈরি হয়ে যেতে পারে একটি সিনেমা, যে সিনেমা অবশ্যই হবে স্পেশাল।”

সর্বভারতীয় আরও একটি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা যায়, রানু মন্ডলের আসল নাম হল রানু রায়। তিনি ববি নামেও পরিচিত ছিলেন। পরে তিনি পরিচিতি পান রানু মারিয়া মন্ডল নামেও। বিত্তশালী পরিবারে জন্মগ্রহণ এরপর মা মারা গেলে নিজের পরিবার ছেড়ে তিনি মানুষ হন মাসির বাড়িতে। অনেকটা অবহেলায় মানুষ হলেও গানের প্রতি তার ছিল অমোঘ আকর্ষণ।

মুম্বাইয়ে স্বামীর সাথে থাকা কালিন তিনি পানশালাতেও গান গেয়েছেন। কিন্তু পানশালাতে গান গাওয়া স্বামীর পছন্দ ছিল না, তাই রোজগার হলেও তা তিনি ছেড়ে দেন।

মুম্বাই থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার পর দিন গুজরানোর জন্য রানাঘাট স্টেশনে বসে গান গাওয়ার পথ বেছে নেন। আর সেই গান নজরে আছে ২৬ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ার অতীন্দ্র চক্রবর্তীর, যিনি সেই গান রেকর্ড করে ছেড়ে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সেই গান নজরে আসে মুম্বাইয়ের প্রযোজকদের। রানুদি ফের পাড়ি দেন মুম্বাইতে। তবে এবার কোন রাঁধুনির স্ত্রী হিসাবে নয়, একেবারে তারকা রূপে।প্লেব্যাক করলেন, অনুষ্ঠানে গান গাইলেন, কেড়ে নিলেন সমস্ত লাইমলাইট। আর এই প্রত্যাবর্তনে চরম খুশি রানুদি। ইতিমধ্যেই তিনি ছটি গান রেকর্ড করে নিয়েছেন বলে জানাও গিয়েছে। তবে এই সকল আনন্দের মাঝে রানুদির রয়েছে একটি বড় আক্ষেপ, “আমার বাড়ি থেকে মুম্বই যাতায়াত করটা একটু কঠিন। মুম্বইতে একটা বাড়ি হলে ভালো হত।”