কারো বার বার হচ্ছে করোনা, কারো একবারও না, কি হতে পারে কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদন : বেশ কয়েকজনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গিয়েছে একবার দুবার নয়, তিন তিনবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার সময় তারা যেভাবে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন দ্বিতীয় অথবা তৃতীয়বারে হয়তো তেমনটা হয়নি। তবে একাধিক বার এই সকল মানুষদের আক্রান্ত হতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যদিকে বেশকিছু মানুষ রয়েছেন যারা এখনো পর্যন্ত একবারও আক্রান্ত হননি। প্রথম, দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় ঢেউয়ের কোনোটিই তাদের ছুঁতে পারেনি।

যখন কোন কোন ব্যক্তি একাধিকবার আক্রান্ত হচ্ছেন সেই সময় কেন কোন কোন ব্যক্তি আবার একবারও আক্রান্ত হচ্ছেন না? অথচ তারাও তাদের মত একইভাবে নিয়ম মেনে চলাচল করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই দ্বিচারিতা কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় আমজনতা। তবে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গিয়েছে সম্প্রতি এক গবেষণায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দ্য ইমপেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন-এর তরফ থেকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রে এর সম্ভাব্য কারণগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এই রহস্যের কথা জানাতে গিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, এর রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে সাধারণ জ্বর কার ক্ষেত্রে কতটা হয়, তার উপর।

গবেষকদের মতে, কে করোনা আক্রান্ত হবেন অথবা কে হবেন না তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে শরীরের T-cells-এর উপর। কারণ রোগ প্রতিরোধের সম্পূর্ণ শক্তিটাই দাঁড়িয়ে রয়েছে এই T-cells-এর উপর। যে কারণে যে সকল ব্যক্তিরা এখনো পর্যন্ত আক্রান্ত হননি তাদের শরীরে কোভিড আটকে দিচ্ছে T-cells।

কিভাবে কাজ করে এই T-cells? কারো শরীরে জ্বর হলো। তারপর সেই জীবাণুর সঙ্গে ওই ব্যক্তির শরীর লড়াই করল এবং লড়াই শেষে ওই জীবাণুর স্মৃতি ধরে রাখল T-cells। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেই স্মৃতি দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু বেশ কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই স্মৃতি অনেকদিন ধরে ধরে রাখে T-cells। এর ফলে এই স্মৃতি ধরে রাখা সময়ের মধ্যে জ্বরের জীবাণু ঢুকলে সেগুলিকে যেমন আটকে দেয় ঠিক তেমনি কোভিডকেও আটকে দেয়।

এর পাশাপাশি ওই গবেষক দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যে সকল ব্যক্তিদের সাধারণ ঠান্ডা লাগা, জ্বর ইত্যাদি তুলনামূলকভাবে কম হয় তাদের কোভিডও তুলনামূলক কম হচ্ছে। এই সকল ব্যক্তিদের T-cells-এর স্মৃতিশক্তি তুলনামূলক অনেক বেশি।

ওই গবেষক দল এমন দ্বিচারিতা কারণ হিসাবে T-cells-এর ভূমিকাকে সম্ভাব্য কারণ হিসাবে দাবি করলেও তারা জানিয়েছেন, খুব অল্প সংখ্যক মানুষকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। ফলে এর সত্যতা নিয়ে এখনও সংশয় আছে। এমত অবস্থায় তারা টিকা নেওয়ার পথ থেকেই নিরাপদ পথ বলে মনে করছেন।