স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে ২৪টি সোনা পেয়েও দিনমজুরের কাজ, সাহায্যে এগিয়ে এলেন ক্রীড়ামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন : স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে ২৪টি সোনা জয় করেছেন ২২ বছর বয়সী হরিয়ানার উশু খেলার তারকা শিক্ষা। তা সত্বে পেটের দায়ে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ নিতে হয়েছে দিনমজুরের। করোনার কারণে তাঁর পরিবার অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ায় বাধ্য হয়ে ট্রেনিং ছেড়ে এই কাজ নিতে হয়েছে তাকে। সোনাজয়ী এই খেলোয়াড়ের দিনমজুরের কাজ করা ছবি খবরে আসতেই প্রশ্নচিহ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের ক্রীড়ামন্ত্রকের খেলোয়াড়দের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে।

স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে ২৪ সোনা জয়ের পরেও একজন খেলোয়াড়কে কেন দিনমজুরের কাজ করতে হবে। কেন এই সব সম্ভবনাময় খেলোয়াড়দের আগে থেকেই সহযোগিতা করা হবে না। সরকারের বিভিন্ন খাতে যখন বিপুল অর্থ ব্যায় করা হচ্ছে, তখন দেশের খেলোয়াড়দের এই সাময়িক সঙ্কটের সময় কেন পথে বসতে হবে?

লকডাউনের কারণে দেশের বহু ক্রিড়াবিদ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিনযাপন করছেন। ক্রিকেট ছাড়া ভারতীয় খেলার জগতের অনান্য খেলার ক্রিড়াবিদদের কমবেশী একই অবস্থা। দেশের ভিতর ও বিদেশের মাটিতে পদক জয় করে দেশকে গর্বিত করলেও এই সব খেলোয়াড়দের সেভাবে পাশে এসে দাঁড়ায়নি দেশের খেল মন্ত্রক। বর্তমান সেই অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।

এই সব খেলোয়াড়দের জন্য কেন্দ্র অথবা রাজ্য সরকার সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন ফান্ড বা অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করে দেয়নি, যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা ভীষণভাবে অর্থনৈতিক সঙ্কটে না পড়েন। তবে উশু তারকার খবর প্রচারে আসতেই তড়িঘড়ি পিঠ বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। উশু তরকার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জাতীয় জনকল্যাণ তহবিল থেকে এই টাকা তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরণ রিজিজু।

উশু চ্যাম্পিয়ন শিক্ষা বর্তমানে স্পোর্টস সায়েন্স নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছেন। তিনি ক্রিয়া মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাকে সহযোগিতা করার জন্য। শিক্ষা জানান, “আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি ক্রিয়া মন্ত্রী ৫ লাখ টাকা দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করায়। বিশেষত এই কঠিন সময়ে। আমি দৃঢ়ভাবে ভাবে সঙ্কল্প দ্রুত আমি আমার ট্রেনিংয়ে ফিরে যাবো। আমি খুশি যে আমাদের খেলমন্ত্রী খেলোয়াড়দের প্রতি দায়িত্বশীল, যন্তবান। আমি সকলের কাছে প্রমিস করছি, একবছরের মধ্যে দেশকে সোনা এনে দেবো।”

সেই সঙ্গে শিক্ষা আরও জানান, “আমার প্রধান লক্ষ্য দেশকে সোনা এনে দেওয়া। আমার বাবা মা আমাকে এতদূর পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে করোনার কারণে সবকিছু থেমে গেছে, ট্রেনিং বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এই দিনমজুরের কাজ করেছি শুধুমাত্র বাবা মা’র জন্য। কিন্তু আমি এখন ট্রেনিংয়ে ফিরতে চাই। কারণ দেশের জন্য সোনা জয় আমার একমাত্র লক্ষ্য।”

যদিও খেলোয়াড় মহলের দাবি, এ শুধু সরকারের মুখ বাঁচানো। যাদের‌ সঙ্কটের খবর প্রচারে আসছে না তাঁদের মধ্যে অনেকেই খেলা ছেড়ে শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই উপেক্ষিত খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করতে এসরকার দ্রুত এগিয়ে আসুক।