‘মনে ধরলো না কাউকে’, বিচ্ছেদের কথা বিবাহবার্ষিকীতে শ্রীলেখার

নিজস্ব প্রতিবেদন : রবীন্দ্রনাথের কথায় না-পাওয়ার গভীরতার মধ্যেই ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। অপূর্ণতায় ভালোবাসাকে সার্থক করে তোলে। হাতের মুঠোয় যাকে পাওয়া যায় তার প্রতি ভালবাসাটা ও সীমিত হয়ে যায় আর যা ধরাছোঁয়ার বাইরে তার প্রতি ভালবাসাটা থাকে অব্যক্ত কিন্তু অন্তহীন। যদিও এই কথার গভীরতা খুব কম মানুষই অন্তর থেকে অনুভব করতে পারেন। তাই তো সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর একজন প্রাক্তন আরেকজন প্রাক্তনের প্রতি দোষারোপ করতে শুরু করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন অন্যজনের ছবি পোস্ট করে যথেচ্ছভাবে গালাগালি শুরু করেন। তবে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র এই পথের পথিক নন। তিনি বরাবরই অন্য ধাঁচের মানুষ। তার কথায়, “দুজন মানুষ সারাজীবন এক ছাদের তলায় নাও থাকতে পারেন। কিন্তু বন্ধুত্ব থেকে যায়। বিচ্ছেদ মানেই তো আর তিক্ততা নয়।”

তাই তো সাত বছর আগে স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও আজ ১৭ বছরের বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে তিনি তার প্রাক্তন স্বামীর সাথে নিজের বিয়ের ছবি পোস্ট করলেন। শুধু ছবি পোস্ট করায় থেমে থাকলেন না অভিনেত্রী, ক্যাপশনে প্রাক্তনের প্রতি প্রশংসাসূচক শব্দেরও প্রয়োগ করলেন।

আসলে শ্রীলেখা কোনদিনই আবেগে ভেসে কোন কথা বলেন না। তিনি যা বলেন নিজের জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করে দেখান। ১৭ বছর আগে ভালোবেসে শিলাদিত্য সান্যালকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী। তাদের এক সন্তানও আছে, নাম ঐশী। ১০ বছর বৈবাহিক সম্পর্কের পর ২০১৩ সালে শিলাদিত্য সান্যালের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় অভিনেত্রীর। ঐশী থেকে যায় শ্রীলেখার কাছেই। যদিও বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে মেয়ের। অপরদিকে সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরও প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে শ্রীলেখার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে।

তবে বিবাহ বিচ্ছেদ না হলে তাদের ১৭ তম বিবাহ বার্ষিকী হতো। আজকের দিনে তাই বিয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন এ অভিনেত্রী লেখেন, “আজ হতে পারতো আমাদের ১৭ তম বিবাহ বার্ষিকী। আমার প্রাক্তন হ্যান্ডসাম না? তাই তো আর সেভাবে কাউকে মনে ধরলো না!”

এই পোষ্টের পাশেই তিনি নেটিজেনদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন, “দুঃখের ইমোজি আর হ্যাপি অ্যানিভার্সারি বললে তৎক্ষণাৎ আনফ্রেন্ড করা হবে।” অভিনেত্রীর সতর্কবার্তার পর নেটিজেনরাও এই বিষয়ে সতর্ক হয়ে গেছে।

নিজের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে অভিনেত্রী জানান, “শিলাদিত্য এবং তাঁর মেয়ের জন্মই তাঁদের কাছে সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত। সেই সময়টা ছিল ম্যাজিকের মতো। নিজেকে ঈশ্বরের মতো মনে হয়েছিল তাঁর।”

আসলে শ্রীলেখা অতীতের খারাপগুলিকে বাদ দিয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলিকে আঁকড়ে বেঁচে থাকায় বিশ্বাসী। ভালো মুহূর্তগুলিকে ভালবেসে তাই তিনি মনে রেখেছেন। আর তাই তিনি আর সকলের থেকে আলাদা, তাই তিনি শ্রীলেখা মিত্র।