টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া সহপাঠীদের পাশে খুদে পড়ুয়া

হিমাদ্রি মন্ডল : টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে কিছু না কিছু করে থাকেন এই খুদে পড়ুয়া। এর আগে টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে বীরভূম জেলা শাসকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বেশ কিছু অর্থ উত্তরবঙ্গের বন্যাত্রাণের জন্য, পরে আবারও সঞ্চয় করে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কেরলের বন্যায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে। আর এবারের জন্মদিনে সে উপহার হিসেবে স্কুলের আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা বেশকিছু পড়ুয়াদের দিলো পেন, খাতা, ব্যাগ।

সেই পরোপকারী পড়ুয়া হলেন বীরভূমের কড়িধ্যা যদুরায় স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুলগ্না সেন। বাড়ি বীরভূমের কড়িধ্যা অঞ্চলের সেনপাড়ায়। প্রথম থেকেই তিনি ওই স্কুলের ছাত্রী এবং প্রতিবছরই তাকে দেখা যায় জন্মদিনে এরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। বারংবার এমন পদক্ষেপে তিনি বহুজন প্রশংসিত।

নিজের স্কুলের উঁচু ক্লাসের দিদির কাছ থেকে এমন উপহার পেয়ে খুশি রিয়া সূত্রধরের মত পড়ুয়ারাও। রিয়া জানায়, “স্কুলের দিদির কাছ থেকে এমন উপহার পেয়ে খুব ভালো লাগছে। আগামী দিনে আমরাও দিদিকে অনুসরণ করে দিদির মতো হওয়ার চেষ্টা করবো।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ ভট্টাচার্য জানান, “ছোট থেকেই মহান মনোভাবের সুলগ্না। এর আগেও সে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুজনের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর এবছর তাঁর জন্মদিনে স্কুলের কিছু আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা ঠিক করি। সেইমতো আমরা একটা লিস্ট তৈরি করে দি। তারপরে সেই জিনিসপত্রগুলি ঐসকল পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেয়। পড়ুয়ারাও আনন্দের সাথে গ্রহণ করে। আর একজন শিক্ষক হিসাবে স্কুলে এমন জনদরদি ছাত্রীকে পেয়ে এর থেকে আর বেশি গর্ব আর আনন্দ কিছু হতে পারেনা।”

সুলগ্না জানাই, “এবছর স্কুলের মধ্যে জন্মদিনটিকে এই ভাবে কাটিয়ে জন্মদিন আলাদা মাত্রা পেয়েছে। আর আমি ওদের খাতা, পেন এবং ব্যাগ দিয়েছি ভালো করে পড়াশোনা করার জন্য।”

সুলগ্না এও জানাই, আগামী দিনেও এই ভাবেই সে সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করবে, আর তাতেই তার আনন্দ।

প্রসঙ্গত, সুলগ্না যে খুব একটা উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্য নন। তিনিও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন। বাবার সামান্য রোজগার, মা সাধারণ গৃহবধূ। তা সত্ত্বেও তার বাবা-মা শিক্ষা-দীক্ষা গান-বাজনা শেখানো ইত্যাদি কোনো দিক থেকেই কসুর রাখেননি।