এবার কি তাহলে ‘এক দেশ, এক বিবাহ বিচ্ছেদ আইন’!

নিজস্ব প্রতিবেদন : আমাদের ভারতবর্ষ বহু ধর্মের দেশ। প্রতিটি ধর্মেরই কিছু আলাদা আলাদা নিয়ম থাকে। সেই কারণে হিন্দু, ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্ম অনুসারে বিবাহ রীতি আলাদা। এক‌ই রকম ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের পদ্ধতিও এক এক ধর্মে এক এক রকম।

কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার ফলে মহিলাদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকেই। সেই কারণে সর্ব ধর্মে বিবাহ বিচ্ছেদে অভিন্ন বিধির দাবি তুলে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা আশ্বিনি কুমার উপাধ্যায়।

বিজেপি নেতা আশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় দুটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন শীর্ষ আদালতে। আদালতে তিনি দাবি করেছিলেন, “সকল ধর্মে মহিলাদের সমান অধিকার দিতে হবে। কোন ধর্মীয় আচরণ যদি তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে তাহলে সেই আচরণকে আইনি সুরক্ষা কবচ দেওয়া দরকার।”

আবার অন্যদিকে খরপোষের অভিন্ন নিয়মের জন্যও সওয়াল করা হয় এদিন। খরপোষের অভিন্ন নিয়মের জন্য সওয়াল করেছেন আইনজীবী মীনাক্ষী আরোরা পিটিশনে বলেছেন, “বিবাহ বিচ্ছেদের নিয়ম বিভিন্ন ধর্মের জন্য আলাদা ও আলাদা আলাদা লিঙ্গের ক্ষেত্রেও আলাদা। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য হিন্দু খৃষ্টান পার্সিরা বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। কিন্তু মুসলিমরা পারেন না। যৌ’নস’ঙ্গমে অক্ষমতার কথা বলে হিন্দু খ্রিষ্টানরা সম্পর্কে ছেদ আনতে পারেন। কিন্তু অন্য ধর্মে এরকমটা হয় না। এইরকম বেশ কিছু উদাহরণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।”

এদিন প্রধান বিচারপতি এস.এ. বোবড়ে, বিচারপতি এ.এস. বোপান্না ও বিচারপতি ভি. রামসুব্রহ্মণ্যমের বেঞ্চে এই মামলা ওঠে। এদিন বিবাহ বিচ্ছেদের অভিন্ন নিয়মের জন্য স‌ওয়াল করেন আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ।

এদিন পিটিশন কারীদের বক্তব্য শোনার পর বেঞ্চ জানিয়েছে, “পিটিশনকারী তাদের এমন একটি দিকে নিয়ে যেতে চাইছে যা ব্যক্তিগত আইনের উপর হস্তক্ষেপ হতে পারে এবং যা কিছু ব্যক্তিগত আইনসিদ্ধ তাকে নষ্ট করতে পারে।”

এরপর বেঞ্চ আবেদনকারীর আইনজীবীদের প্রশ্ন করে ব্যক্তিগত আইনের পরিধি অতিক্রম না করে কি এই সব বৈষম্য আদৌ দূর করা সম্ভব। তখন আইনজীবীরা তিন তালাকের প্রসঙ্গের অবতারণা করেন।

প্রসঙ্গত, তিন তালাককে সুপ্রিমকোর্টে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এর উত্তরে বেঞ্চ জানায়, “মুসলিম পার্সোনাল ল-তে তিন তালাকের কোন স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। তাই এই ক্ষেত্রে সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের তুলনা করা যায় না।”

এরপর বেঞ্চ অভিন্ন বিবাহ বিচ্ছেদ ও খরপোষ বিধি প্রসঙ্গে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়ে কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছেন।