হেরিটেজ তকমা পেল সিউড়ির বিখ্যাত ঘড়ি, অবশেষে স্বপ্নপূরণ

নিজস্ব প্রতিবেদন : বীরভূমের সিউড়ি শহরের ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের মাথায় রয়েছে ব্রিটিশ আমলের একটি বিশালাকার ঘড়ি। যে ঘড়িটি শেষবার চলেছিল ২০১৬ সালে। এই ঘড়ির আওয়াজ এক সময় সিউড়ির বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙাতো। শুধু সিউড়ি নয়, পাশাপাশি এই ঘড়ির ঘন্টার আওয়াজ পৌঁছে যেত পার্শ্ববর্তী কড়িধ্যা সহ বিভিন্ন গ্রামে।

২০১৬ সাল থেকে টানা ছয় বছর ধরে এই ঘড়ি বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময় শহরের প্রবীণ নাগরিকরা এই ঘড়িটি সারানোর দাবি তুলেছেন প্রশাসনের কাছে। প্রশাসনের কাছে এই ঘড়ি সারানোর দাবি তোলার পাশাপাশি এটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করারও দাবি তোলা হয়। সেই সকল দাবি যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঘড়িটি এখনো সচল না হলেও অবশেষে তা হেরিটেজ ঘোষিত হল।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের তরফ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের ১৩ টি ঐতিহ্যকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে। এই ১৩ টি ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে সিউড়ির এই ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের উপরে থাকা ঘড়ি। হেরিটেজ ঘোষণার এই তালিকায় ৫ নম্বরের স্থান পেয়েছে সিউড়ির ঐতিহ্যবাহী এই ঘড়িটি। এই ঘড়ির হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে খুশি হয়েছেন সিউড়ির ৮ থেকে ৮০ প্রত্যেকেই।

এই ঘড়িটি সিউড়ির এই ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে স্থাপন করা হয়েছিল ১৯০৩ সাল নাগাদ। ঘড়িটি সরকারিভাবে কেনা নয়। এই ঘড়ি উপহার হিসাবে তৎকালীন বীরভূম জেলা কালেক্টরকে দিয়েছিলেন হেতমপুরের রাজকুমার মহিমা নিরঞ্জন চক্রবর্তী। ঘড়িটি আনা হয়েছিল লন্ডন থেকে। এই ঘড়ি তৈরি করা হয় অনেকটা লন্ডনের ‘বিগ বেন’-এর মত। এরপর থেকেই এই ঘড়ি সিউড়ির বিগ বেন নামে পরিচিত।

১৯ দশকের প্রথম দিকে এই ঘড়িটি স্থাপন করার পর প্রায় ৭০ বছর নির্বিঘ্নে পরিষেবা দেয়। এরপর ১৯৭০ সাল নাগাদ বজ্রপাতের কারণে একবার এই ঘড়ি খারাপ হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ঘড়িটি বন্ধ থাকে। ১৯৯৫ সালে এই ঘড়িটি ঠিক করে পুনরায় সচল করেন সিউড়ির এক মেকানিক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এরপর মাঝে মাঝে অল্পবিস্তর গন্ডগোল দেখা দিলেও চলত। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে এই ঘড়ি একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।