চালু হলো স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস, নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে অসহায় বৃদ্ধ মায়েদের

নিজস্ব প্রতিবেদন : দূর থেকে দেখলে মনে হবে একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে এলেই সেই ভুল ধারণা ভাঙবে এবং দেখা যাবে এটি একটি এমন জায়গা যেখানে বৃদ্ধ অসহায় মায়েদের স্বপ্ন নতুন করে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ থেকেই এর নাম দেওয়া হয়েছে স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস। ঠিক যেমন ট্রেনে চড়লে আর পাঁচটা যাত্রীদের সঙ্গে গল্প গুজব করা যায় এবং নিশ্চিন্তে গন্তব্যে পৌঁছে যায় ঠিক সেই রকমই ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

এমন অভিনব একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বীরভূমের এক লেডি কনস্টেবল ছবিলা খাতুনের তরফ থেকে। তিনি তার এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য নিজের নতুন একটি চারচাকা গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। বিক্রি করে দেওয়া সেই চারচাকা গাড়ির টাকা থেকে তিনি সিউড়ির পার্শ্ববর্তী কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের শালবনী গ্রামে কিনেছেন দেড় বিঘা জমি। সেখানেই গড়ে তুলেছেন এই স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস বৃদ্ধাশ্রম।

ছবিলা খাতুন এবং তার মা দুজনেই সমাজসেবার প্রতি আকৃষ্ট। তবে তার মা এখন কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। মায়ের চিকিৎসা খরচ এবং সংসারের খরচ বাঁচিয়ে তিনি এই বৃদ্ধাশ্রম চালু করার মত কঠিন চ্যালেঞ্জ তুলে নিয়েছেন। তবে তার এই স্বপ্ন পূরণের জন্য বীরভূম জেলা পুলিশের বিভিন্ন আধিকারিকরা তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করছেন।

এখানে ইতিমধ্যেই ১০ জন বৃদ্ধ মা, যাদের মধ্যে কেউ স্টেশনে ঘুরে ঘুরে রাত কাটাতেন, আবার কেউ সন্তান থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন তাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। মোট ২৫ জনের থাকার জায়গা করা হলেও আর্থিক টানাপোড়েন থাকার কারণে এখনো পর্যন্ত ১০ জনকেই জায়গা করে দিতে পেরেছেন তিনি। তবে তার বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি বাকি ১৫ জনকেও জায়গা করে দেবেন।

স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস এখন সেই সকল বৃদ্ধ মায়েদের কাছে স্বপ্নের ট্রেন হয়ে দাঁড়িয়েছে যারা দিন কয়েক আগেই বুঝতে পারছিলেন না, কি খাবেন, কোথায় থাকবেন। এখন তারা এইভাবে ছবিলার এই স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেসে সিট জায়গা পেয়ে নিশ্চিন্তভাবে দিন গুজরানোর সুযোগ পেলেন।