দিলদারের পুনরাবৃত্তি, স্বরূপের পরিবার এখন তৃণমূলের মেম্বার

অমরনাথ দত্ত : চলতি মাসের গত ৬ তারিখ বীরভূমের নানুর থানার অন্তর্গত রামকৃষ্ণপুর গ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন বিজেপি নেতা স্বরূপ গড়াই। নানুর থানায় এরপরই বিজেপির পক্ষ থেকে স্বরূপ হত্যা করার অভিযোগে একাধিক তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার পর গ্রেপ্তার করা হয় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজনকে।

এরপর বীরভূম জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে ধর্না মঞ্চ করে বিজেপি। ৬ দিন ধরে চলে এই ধরনা মঞ্চ। জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন বিজেপি নেতারা আসতে শুরু করে এই ধরনা মঞ্চে। কেরিম খানকে গ্রেফতারের দাবিতে অনড় হয়ে যায় বিজেপি। যদিও ষষ্ঠ দিনে ধরনা মঞ্চ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল সহ একাধিক বিজেপি নেতা কর্মীকে। পুলিশের পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয় ধরনা মঞ্চ। ধর্না মঞ্চ তুললেও তৃণমূল নেতা কেরিম খানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছে জেলা বিজেপি। যদিও অভিযোগ, প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিলো কেরিম খানকে। দিনের পর দিন কাটলেও গ্রেপ্তার হয়নি মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মদক্ষ কেরিম খান।

এরপর এদিন হঠাৎ ঘটনা রূপ পেলো উল্টো পুরাণের। এতদিন স্বরূপ গড়াইয়ের পরিবারের লোকজন বলে আসছিল তার স্বামী বিজেপি করে, তৃণমূলের গুন্ডারা তাকে গুলি করে খুন করেছে। এমনকি মৃত্যুর আগে স্বরূপও নিজে ক্যামেরার সামনে সে কথায় বলে গিয়েছেন। সেই স্বরূপের স্ত্রী আজ বোলপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে দেখা গেল তৃণমূল দপ্তরে। পাশাপাশি প্রত্যাহার করে নিলেন স্বামী খুনে তৃণমূল নেতাদের নাম ও অভিযোগ।

তিনি এদিন বলছেন, তাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সাথে যুক্ত। প্রশ্ন উঠছে তাহলে তখন তিনি কেন বলেছিলেন তার স্বামী বিজেপি করে? এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য তিনি শরীর খারাপের বাহানায় এড়িয়ে গেছেন।

আর এতেই রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছে বিজেপি। বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলের দাবি, “চাপ দিয়ে জোড় করে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে তৃণমূল। পাশাপাশি স্বরূপের স্ত্রীর ভাই সিভিক ভলেন্টিয়ারে কর্মরত। পুলিশের পক্ষ থেকে ও তৃণমূল নেতাদের পক্ষ থেকে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল তাদের ওপর। পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ারও লোভ দেখানো হচ্ছিলো তাদের।”

বিজেপি নেতার মতে হয়তো সে কারণেই আজ তৃণমূল দপ্তরে স্বরূপ গড়াইয়ের স্ত্রী। ঠিক যেমনটা হয়েছিল শেখ দিলদার খুনের ঘটনায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে।

যদিও বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সাফ কথা, “স্বরূপ বিজেপি নয়, ছিলেন তৃণমূলের সাথেই। তার পরিবারও আছে তৃণমূলের সাথে। জোড় করে অভিযোগ লিখিয়েছিল বিজেপি, তাই অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে তার স্ত্রী।”