আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু ভারতের চেনাব রেল সেতু, কি কি রয়েছে বিশেষত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে খুব সহজেই রেলপথে যুক্ত হতে চলেছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর। এযাবৎ উধমপুর শ্রীনগর বারামুলা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের মাধ্যমে মাতা বৈষ্ণোদেবী কাটরা স্টেশন পর্যন্ত দিল্লি থেকে সরাসরি ট্রেন চলাচল করত। পাশাপাশি কাজিগুন্ড থেকে বারামুলার পর্যন্ত চলত ট্রেন। তবে এবার এই রেল যোগাযোগ আরও সুগম করার জন্য ১৩ আগস্ট চেনাব রেল সেতুর মধ্য দিয়ে যুক্ত হল গোল্ডেন জয়েন্ট।

চেনাব বা চন্দ্রভাগা নদীর উপর তৈরি হওয়া এই চেনাব রেল সেতু ১৩১৫ মিটার লম্বা ও ৩৫৯ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট। এই রেল সেতু পৃথিবীর উচ্চতম রেল সেতু হওয়ার পাশাপাশি আইফেল টাওয়ারের চেয়েও প্রায় ৩৫ মিটার উঁচু। এই রেল সেতু তৈরি করার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভাবে ভারতীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে এই রেল সেতু ভারতীয় প্রযুক্তির অন্যতম নিদর্শন হয়ে উঠল।

২০০৪ সালে এই রেল সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০০৮-০৯ সালে নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে। তবে পরে আবার এই কাজ শুরু করা হয়। ১৩ আগস্ট গোল্ডেন জয়েন্ট লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন এই রেল সেতু নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক ও কর্মীরা। এই গোল্ডেন জয়েন্ট সফলভাবে লাগানো যেন তাদের কাছে বিশেষ প্রাপ্তি হয়ে দাঁড়ায়।

চন্দ্রভাগা নদীর উপর বিশ্বের উচ্চতম এই রেল সেতু নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ২৮ হাজার ৬৬০ মেট্রিক টন স্টিল ও ৬৬ হাজার ঘনমিটার কংক্রিট। এই রেল সেতু নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আনার জন্য হিমালয়ের দুর্গম এলাকায় ২৬ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়। স্টিল বক্স দিয়ে তৈরি ব্রিজের প্রধান আর্চটির মোট ওজন ১০ হাজার ৬১৯ মেট্রিক টন।

হিমালয়ের এই এলাকায় বাতাসের গতিবেগ অনেক বেশি থাকার কারণে এমন পরিকল্পনা করে এই রেল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে যাতে ঘন্টায় ২৬৬ কিলোমিটার গতিবেগ সামলে নিতে সক্ষম এই রেল সেতু। পাশাপাশি তীব্র ভূমিকম্প এবং নাশকতামূলক হামলার ক্ষেত্রেও এই রেল সেতু খুব সহজে সমস্ত প্রতিকূলতা সহ্য করে নিতে সক্ষম। রেল মন্ত্রকের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, এই রেল সেতু নির্মাণ করার জন্য ১ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।