নামেই ভিখারি, অবাক করা আয় দেশের এই ৬ ভিক্ষুকের, রয়েছে ফ্ল্যাটও

আমাদের দেশ ভারতবর্ষ উন্নয়নশীল দেশ। দেশের সিংহভাগ জনগণই শারীরিক পরিশ্রম করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে এর পাশাপাশি এমন প্রচুর মানুষ আছে যারা অন্যের কাছে হাত পেতেই তাদের দিন গুজরান করে থাকেন। এদেরকে আমরা ভিক্ষুক বলে থাকি। কেউ কেউ ভিক্ষা করেন পরিস্থিতির শিকার হয়ে, কেউ বা ভিক্ষা করেন স্বভাবের বশে। যদিও ভারতে ভিক্ষাবৃত্তিকে খুব একটা সম্মানের চোখে দেখা হয় না। তবে দেশে এমন অনেক ভিক্ষুক আছেন যারা শুধুমাত্র ভিক্ষাবৃত্তি করেই এত ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন যা শুনলে চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগাড় হয়। আজকের প্রতিবেদনে এমন কিছু ধনী ভিক্ষুক-দের (richest beggers) সম্পর্কে বলা হলো, যাদের লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি এবং বিলাসিতার বহর শুনলে অবাক হতে হয়।

১. বীরভীচাঁদ আজাদ : বীরভীচাঁদ আজাদ মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। তিনি ৮২ বছর বয়সে মারা যান। এই ভিক্ষুকের মৃত্যুর পর তার বাড়ি অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ ১.৭৭ লক্ষ টাকার কয়েন এবং ৮.৭৭ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজপত্র উদ্ধার করে। তার পাশাপাশি বীরভীচাঁদ আধার কার্ড, প্যান কার্ড, সিনিয়র সিটিজেন কার্ড এর মত সমস্ত দরকারি কাগজপত্রই তৈরি করিয়েছিলেন। পুলিশ তার বাড়িতে অনুসন্ধানের সময় আটটি ব্যাগ ভর্তি কয়েন পেয়েছিল। যা গুনতে পুলিশের প্রায় ছয় ঘন্টা সময় লেগে যায়।

২. সর্বতীয়া দেবী : বিহারের পাটনা নিবাসী সর্বতীয়া দেবী নামক এক ভিক্ষুক ছিলেন যিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে তার দিন গুজরান করতেন। তবে তার বিলাসবহুল জীবনযাপনের বহর শুনলে চমকে যেতে হয়। শুধুমাত্র ভিক্ষাবৃত্তি করেই প্রচুর টাকা যৌতুক দিয়ে বড় ঘরে নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। যৌতুক হিসেবে তিনি দিয়েছিলেন ৩৬,০০০ টাকার বীমা প্রিমিয়াম।

৩. ভরত জৈন : দেশের ধনী ভিক্ষুকদের তিনি অন্যতম। ভিক্ষাবৃত্তি করে মুম্বাইয়ের বুকে মোট ৭০ লক্ষ টাকার দুটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। ভরত জৈন ভিক্ষা করে মাসে লক্ষ টাকার উপর উপার্জন করতেন। যদিও তার পরিবার মুম্বাইতে একটি স্টেশনারি দোকান চালাতেন। তার পরিবার থেকে তাকে বহুবার ভিক্ষা করার থেকে বিরত করার চেষ্টা করে, কিন্তু তিনি কারো কথাই শুনতেন না।

৪. সম্ভাজি কালে : সম্ভাজি তার পুরো পরিবার নিয়ে মুম্বাইয়ের খাঁর অঞ্চলে বাস করেন। তার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা চারজন। এই চারজনই ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ভিক্ষুক হলেও, ভিক্ষা করেই সংগ্রহ করেছেন প্রচুর অর্থ। তার সম্পত্তির মধ্যে আছে ভিরারে দুটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট। মহারাষ্ট্রের সোলাপুরেও তাদের একটি জমি আছে। তার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সও চোখে পড়ার মতো।

৫. কৃষ্ণ কুমার : তিনিও মহারাষ্ট্রেরই বাসিন্দা। মুম্বাই শহরে ভিক্ষাবৃত্তি করে কৃষ্ণকুমার দিনপ্রতি কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ টাকা উপার্জন করে থাকেন। তাকে মুম্বাইয়ের জার্নি রোডের সিপি ট্যাংক এর কাছে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। এই ভিক্ষা করে তিনি একটি ফ্ল্যাটও কিনেছেন। সেই ফ্ল্যাটে তিনি এবং তার ভাই দুজনে থাকেন।

৬. লক্ষ্মী দাস : মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে তিনি ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে তার নামের সঙ্গে তার ধন-সম্পত্তির রয়েছে সামঞ্জস্য। ভিক্ষাবৃত্তি করে তিনি যা রোজগার করেছেন তা শুনলে যে কাউকেই ভিমড়ি খেতে হবে।