কব্জি থেকে নেই দুই হাতের অংশ, সারেগামাপা-এ গান গেয়ে মন জয় পাহাড়ি প্রতিযোগীর

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ‘সারেগামাপা’-র ২০২১ সালের সফর ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই সফরে এখন চলছে অডিশন পর্ব। এই অডিশন পর্বেই একের পর এক প্রতিযোগী তাদের প্রতিভা বলে নজর কাড়ছে বিচারকদের। তবে এই সকল প্রতিযোগীদের মধ্যে আলাদা ভাবে নজর কাড়লেন এক পাহাড়ি প্রতিযোগী।

পাহাড়ি ওই প্রতিযোগীর আলাদা ভাবে নজর কাড়ার কারণে রয়েছে তার দুই হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ না থাকার কারণে। অডিশনের মঞ্চে আসা এই পাহাড়ী প্রতিযোগীর ইলেকট্রিক শকের কারণে খুইয়ে গিয়েছিল দুই হাত। দুর্ঘটনার সময় তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। সারেগামাপা-র মঞ্চে প্রথমে এই প্রতিযোগীকে দেখেই অবাক হয়ে যান বিচারকের আসনে বসে থাকা হিমেশ রেশামিয়া, বিশাল দাদলানি, শঙ্কর মহাদেবনের মত বিচারকরা।

এর পরেই প্রতিযোগীর জীবন যুদ্ধের কাহিনী ফুটে ওঠে ওই মঞ্চে। জীবনের অদম্য লড়াইয়ের জেদ কিভাবে তাকে সমস্ত প্রতিকূলতার দূরে সরিয়ে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে সেই গল্প অনুপ্রাণিত করে মঞ্চে উপস্থিত বিচারক থেকে দর্শকদের। এই তরুণ প্রতিযোগীর নাম হল থুপটেন সেরিং। তিনি অরুণাচল প্রদেশ থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য অডিশন দিতে এসেছেন।

অডিশন মঞ্চে তার মুখ থেকে তার জীবনের এই লড়াই সম্পর্কে যে কথাগুলি উঠে এসেছে তা থেকে জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার পর এই তরুণ প্রতিযোগীর জীবন স্তব্ধ হয়ে যায়। তবে তিনি ঘুরে দাঁড়ান গ্রামের এক বৌদ্ধ মঠের লামার হাত ধরে। এক সময় তাকে খাওয়া দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তার মায়ের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো, কিন্তু পরবর্তীকালে ওই হাত কাটা অবস্থাতেই শিখে ফেলেছেন সবকিছু।

হাত কাটা অবস্থাতেই সে এখন ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল সবকিছু খেলতে পারে। এমনকি গাড়ি চালানো, ছবি আঁকা আর সঙ্গে ভালো গানও গাইতে পারে। তবে ভালো গান গাইতে পারলেও সে কখনো কোথাও গান শেখেনি বলেই জানিয়েছে সারেগামাপা-র এই অডিশন মঞ্চে।

গান না শিখলেও তার গানের গলা ঈশ্বর প্রদত্ত কণ্ঠস্বর বলে দাবি করেছেন হিমেশ রেশমিয়া। একইভাবে শঙ্কর মহাদেবন সহ অন্যান্য বিচারকরা তার গলায় মুগ্ধ হন এবং তাকে সম্মতি দেন পরবর্তী রাউন্ডে প্রবেশের জন্য।