বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতার দুটি পদক্ষেপ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরে

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ১৯-এর লোকসভায় যেভাবে ৪২ এ ৪২ এর ডাক দিয়েছিল তার ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারেনি। বরং তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে বাংলায় ১৮টি আসনে পদ্ম ফুটিয়েছে গেরুয়া শিবির। এর পরেই একের পর এক নেতাকর্মীদের দলের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখানো চরম অস্বস্তিতে ফেলে শাসকদলকে।

অপরদিকে গেরুয়া শিবির প্রতিনিয়ত তাদের শক্তি বৃদ্ধি করার কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। শাসকদল এবং অন্যান্য দল থেকে একাধিক নেতা কর্মীকে নিজেদের দলে জায়গা দেওয়ার পাশাপাশি শেষ শুভেন্দু অধিকারী সহ ১০ জন বিধায়ক, একাধিক বর্তমান এবং প্রাক্তন মন্ত্রী, সাংসদদের দলে নিয়ে কঠোর থেকে কঠোরতম চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় তৃণমূলকে। তবে এর পরেই শাসকদলের দুটি মোক্ষম চাল উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের। সূত্রের খবর সরকারের আনা দুটি প্রকল্প উদ্বেগের বাতাবরণ তৈরি করেছে। প্রকল্প দুটি হল ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘স্বাস্থ্যসাথী’।

‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি জটিল প্রক্রিয়া থেকে রাজ্যের বাসিন্দাদের মুক্তি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। এই প্রকল্পের ফলে যেমন সরকারের জনদরদি মুখ সকলের সামনে ফুটে উঠছে ঠিক তেমনই কৌশলে জনসংযোগের কাজটিও সেরে ফেলছে সরকার।

তৃণমূল নেতা নেত্রীদের মন্তব্য অনুযায়ী, “দুয়ারে সরকার প্রকল্প যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মাস্টার স্ট্রোক হতে চলেছে তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে উপকৃতের সংখ্যাটা কোটি ছাড়িয়ে গেছে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষেরা যেভাবে সুবিধা পাচ্ছেন তাতে এর ফল ভোট বাক্সে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।”

অপরদিকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক হলো স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। এই প্রকল্প আগে সীমিত কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ডিসেম্বর মাসে তিনি ঘোষণা করেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প দেওয়ার। আর এর পরেই এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ইতিমধ্যেই নাম তুলে নিয়েছেন সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৬৬ লক্ষের বেশি মানুষ।

আর এই দুই প্রকল্প তৃণমূলকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তা মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাই। প্রকাশ্যে ততটা পাত্তা দিতে না চাইলেও দলের অন্দরে অনেক নেতা চিন্তা ব্যক্ত করছে বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।

তবে উদ্বেগ বাড়ালেও হাত গুটিয়ে নেই গেরুয়া শিবির। বরং তারাও পাল্টা একাধিক কর্মসূচি এনে শাসক দলকে প্রতিনিয়ত চাপে ফেলছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাধিক সভা, রোড শো ইত্যাদি।