লকডাউনে টান পড়ছে খাবারে, দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াতে খুললো ফ্রি বাজার

অমরনাথ দত্ত : বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতিতে অনেকের খাবার প্রয়োজন আছে, অথচ তারা লজ্জায় চাইতে পারছেন না। আবার দিন দিন লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ায় বহু গরিব মানুষের বাড়িতে খাবারে টান পড়ছে। এই দুই সমস্যা খাবারে টান পড়া আর লজ্জা দূর করার জন্য অভিনব এক পন্থা বেছে নিলেন বীরভূমের এক সমাজসেবী তথা তৃণমূল নেতা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চালু করলেন ‘ফ্রি বাজার’। যেখান থেকে যে কেউ তার প্রয়োজন মতো খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। আর এর জন্য কোন টাকা পয়সা খরচ করতে না হলেও মানতে হবে কয়েকটি নিয়ম। এক হল বাজার করার আগে হাত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করা আর দ্বিতীয়ত হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে বা মুখ ঢেকে বাজার করা।

এমনই এক ফ্রি বাজার খোলা হয়েছে নানুরের সমাজসেবী তথা তৃণমূল নেতা কাজল শেখের উদ্যোগে। নানুরের পাপুড়ি গ্রামের এক মাদ্রাসার মাঠে এমন বাজার খুলেছেন তিনি। যেখান থেকে গ্রামের বাসিন্দারা তাদের চাহিদামত খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যেতে পারবেন। আর এই ফ্রি বাজার তৈরি করার মূলে রয়েছে আরও এক উদ্দেশ্য যা হলো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গ্রামের কোন বাসিন্দা যেন বাইরে না যান।

ফ্রি বাজার তৈরি করে কাজল শেখ জানান, “এই বাজার বীরভূম জেলার বিভিন্ন সমাজসেবী মানুষের সহযোগিতায় চালানো হচ্ছে। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন চলবে এই বাজার। প্রথম প্রথম আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছিল অনেক মানুষই রয়েছেন যাদের বাড়িতে খাবার নেই। অথচ তারা লজ্জায় খাবার নিতে পারছিলেন না। এর পরেই আমরা এরকম ফ্রি বাজার তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করি। যাতে করে কাউকে লজ্জাতে যেন পড়তে না হয়, পাশাপাশি তার চাহিদাও যেন সম্পূর্ণ হয়।”

প্রসঙ্গত, দুদিন আগেই এই তৃণমূল নেতা একটি ছোট জায়গায় তৃণমূল পার্টি অফিস থেকেই ফ্রি বাজার চালু করেছিলেন। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছিল নানুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছেন। পাশাপাশি পার্টি অফিসের তকমাটাও লেগে যাচ্ছিল। আর যারা আসছেন তারা প্রত্যেকেই দুঃস্থ। সুতরাং কাউকে ফেরানোও যায় না। যে কারণে আরও বড় জায়গার প্রয়োজন হয়ে ওঠে। আর তারপরেই ফ্রি বাজারকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় নানুরের এই মাদ্রাসার মাঠে।