করোনা ঠেকাতে ভোটের মত আঙ্গুলে কালির দাগ দেবে প্রশাসন

হিমাদ্রি মন্ডল : রাজ্যে প্রতিনিয়ত হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকে যে রিপোর্ট পেশ করা হয় তাতে দেখা গিয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে নতুন করে ৩৪৪ জনের শরীরে ধরা পড়েছে করনা সংক্রমণ। আর এই সংখ্যাটা একদিনের পরিসংখ্যানে এখনো পর্যন্ত সর্বাধিক। আর একদিনে এই বিপুল পরিমাণ সংক্রমণ বাড়ায় রাজ্যে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৫৩৬।

এতদিন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সবথেকে বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছিল কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও। কিন্তু এবার অন্যান্য জেলাগুলিতেও বাড়ছে সংক্রমণ। রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বীরভূমেও একদিনে বিপুল পরিমাণ সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বীরভূমে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ২৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যাও কিনা এযাবৎ সর্বাধিক। বীরভূমে মোট করোনা পজিটিভের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০। আর এইভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সংক্রমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার জরুরী ভিত্তিতে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করা হয় বীরভূমের সদর শহর সিউড়িতে।

যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূম জেলা পরিষদের পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, বীরভূম জেলার পুলিশ আধিকারিকরা, স্বাস্থ্য আধিকারিক, ১৯ টি ব্লকের বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা।

বৈঠক শেষে বীরভূম জেলা পরিষদের পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ জানান, “বীরভূমে যেসব পরিযায়ী শ্রমিকরা পাঁচ রাজ্য মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ থেকে ফেরত আসছেন তাদের নন হোম কোয়ারান্টিনে রাখা হবে। বাকিদের রাখা হবে হোম কোয়ারান্টিনে। বীরভূমের ১৯ ব্লকে দুটি করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হবে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। প্রত্যেকের ডান হাতের আঙ্গুলে কালির দাগ দিয়ে দেওয়া হবে চিহ্নিতকরণের জন্য। ডান হাতের আঙ্গুলে সেই দাগ দেওয়া হবে। যাতে করে বোঝা যায় এই ব্যক্তির কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশ আছে। ১৬৭ টি পঞ্চায়েত এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মোটর সাইকেলে দুজন সিভিক পুলিশ নজরদারিতে রাখা হবে। এছাড়াও সঙ্গে থাকবেন আশা কর্মীরা এবং পঞ্চায়েত সদস্যরা। পাশাপাশি নামানো হবে রেজিস্টার্ড ক্লাবগুলিকে।”

বীরভূমে এতদিন একটি কোভিড হাসপাতাল ছিল বোলপুরের গ্লোকাল হাসপাতাল। এরপর রামপুরহাটে আরও একটি কোভিড হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৪০ শয্যাবিশিষ্ট। আর এই দুই হাসপাতাল মিলে জেলায় মোট বেড সংখ্যা দাঁড়ালো ৮০।