করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব ক্রিকেটে প্রয়োজন যে ৫ নিয়মের পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তেই বন্ধ হয় খেলাধূলা। বাতিল একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া। টোকিও অলিম্পিককেও এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়। করোনার কবলে এখনও বন্ধ বিশ্বের সবথেকে দাবি ঘরোয়া লীগ আইপিএল। আর আইপিএল-এর মতই বাতিল হয়েছে নানান ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। আর করোনা মোকাবিলায় পরবর্তী সময় যখন আবার সবরকম খেলাধূলা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে তখনও বিশ্ব ক্রিকেটে উচিত ৫টি নিয়মের পরিবর্তন ঘটানো, যতদিন না করোনা থেকে মুক্তির নিশ্চিত রাস্তা মিলছে।

১) বলে থুতু লাগানো : বোলিং করার আগে বোলাররা বলে থুতু লাগিয়ে নেন। এই দৃশ্যটি সকল ক্রিকেটপ্রেমীদের ভীষন চেনা। এই থুতু বোলারদের সুইং পেতে সাহায্য করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে গবেষকরা বলেই দিয়েছেন যে লালারস থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশী, সেক্ষেত্রে এই কাজটি অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে। সুতরাং পরিস্থিতি বিবেচনা করে আইসিসির তরফ থেকে এই কাজটি বন্ধ করার জন্য নিয়ম বানানো উচিৎ।

২) হ্যান্ডশেক বন্ধ করা : হ্যাণ্ডশেক ক্রিকেটের মাঠে একটি পরিচিত দৃশ্য। শুধু ক্রিকেট নয়, অন্যান্য প্রতিটি খেলার ক্ষেত্রেই এই দৃশ্য দেখা যায়। খেলা শুরুর আগে বা পরে উভয় দলের অধিনায়করা টসের সময় পরস্পরের সাথে হ্যান্ডশেক করেন। আবার অন্যদিকে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে দুই দলের খেলোয়াড়রা পরস্পরের সাথে হ্যান্ডশেক করেন। এমনটা ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেও লক্ষণীয়। এটিকে বরাবরই খেলোয়াড় সুলভ নিয়মের মধ্যে রাখা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব মহামারীর পরবর্তী সময় এটিকে বাতিল করা উচিত।  যেহেতু আমরা জানি যে গবেষকদের মতে দুজন ব্যক্তির মধ্যে হ্যান্ডশেকের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশী থাকে।

৩) দর্শক বিহীন ম্যাচ : বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রিকেট দর্শকদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে যদি খেলা নিয়ম মাফিক করতে হয় সেখানে একটাই উপায় থাকে দর্শক ছাড়াই ম্যাচ খেলা হবে। এমনকি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে এইভাবেই বেশ কিছু ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে গ্যালারিতে কোনো দর্শক নেই। তবে এক্ষেত্রেও খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের দিকে সম্পূর্ণ নজর দিতে হবে। সম্পূর্ণভাবে তাদের পরীক্ষার পরই খেলা অনুষ্ঠিত করা যাবে। বিসিসিআইয়ের তরফ থেকেও এরকম ভাবনার কথা সামনে এসেছে। এই উপায় খেলা চালিয়েও যাওয়া যাবে, পাশাপাশি গোষ্ঠী সংক্রমণের অবকাশ থাকবে না।

৪) দর্শকদের শারীরিক পরীক্ষা ও স্যানিটাইজেশন : মানুষ স্টেডিয়ামে ছুটে যান তাদের পছন্দের দলকে সমর্থন করার জন্য। বর্তমান বিশ্ব মহামারীর এই পরিস্থিতির পর ভক্তরা আবার স্টেডিয়াম মুখী হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। সেক্ষেত্রে ক্রিকেট সংস্থাগুলিকে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সম্প্রতি ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড সাধারণ ক্রিকেটকে আবার ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে এবং তারজন্য খেলোয়াড় ও দর্শকদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করারও পরিকল্পনা নিয়েছে। ঠিকভাবে স্যানিটাইজেসন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরই দর্শকরা স্টেডিয়ামের মধ্যে ম্যাচ দেখার জন্য ঢোকার অনুমতি পাবেন। লকডাউন পরবর্তীকালে ক্রিকেটের ম্যাচে নিরাপত্তার খাতিরে শারীরিক পরীক্ষা ও স্যানিটাইজেশন বাধ্যতামূলক করা উচিত।

৫) সামাজিক দূরত্বের জন্য জ্যামপ্যাকড স্টেডিয়াম : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানোর জন্য যেহেতু এখনও কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, তাই বর্তমানে এই সংক্রমণ আটকানোর একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব। এক্ষেত্রে বিশ্বের ক্রিকেট বোর্ডগুলিকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। সেক্ষেত্রে দর্শকদের ম্যাচ দেখতে হলে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে ম্যাচ দেখার জন্য নিয়ম করা উচিত। এর ফলে তারা যেমন তারা ম্যাচ দেখতে পারবে তেমনই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও সম্ভব হবে।